ক্লিশে হয়ে যাওয়া দুঃখ
|| মনোজ দে ||
ডিসেম্বর, আমাদের ভালোবাসার দিন। নীচু মুখ, লাল হয়ে আসা আঙুল, তোমার আড়ষ্টতা - প্রথম যা কিছু, সমস্তই আমার প্রিয়। সেও এক আশ্চর্য পৃথিবী! বাদামওয়ালা নেই, নেই কোনো ছুটির দিন। তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছি মুহূর্তগুলোকে। আমাদের প্রথম পুজো, তোমার জন্মদিন, আর ওই বরাদ্দ দশ মিনিট। মনে পড়ে? দুঃখ পেয়েছিলে, জানি। আর আমার আঁতেলমার্কা স্বান্তনা, "আগামী জন্মদিনে এই দশ মিনিট আর ফুরোবে না।" সত্যি বলো, লাঘব করেনি?
এ সব কিসসা, ফোনকলের দিনে সোস্যাল মিডিয়া সেভাবে আসেনি। যাবতীয় ঝগড়া, খুনসুঁটি সেভাবে কখনোই শেয়ার হয়নি। শুধু কিছু ব্যাক্তিগত ছবিতে অভ্যাসবশত লাইক। এসব নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। বরং এক অদ্ভুত নেশার মধ্যে কাটিয়েছি। সেই ঘোরে অনায়াসে কেটে যেতে পারতো, আগামী বেশ কয়েক বছর। কিন্তু তুমি চাও, লেখালিখি। তুমি চাও, কোনোভাবেই যেন কবিতা লেখা না ছাড়ি। তা নাহলে এক তীব্র অপরাধ বোধ তোমাকে জাপটে ধরবে। তাই, কবিতা লিখি, প্রকাশিত হোক। উল্লাসে উল্লাসে ছড়িয়ে পড়ুক। তুমি কী পড়বে সে লেখা? এই কৌতুহলে আরও দশখানা কবিতা।
শোনো, এই সাহিত্য আজকাল অপচয় মনে হয়। তোমাকে লিখতে ভাল্লাগে না আর। হয়তো জানো না, দুঃখও উপভোগযোগ্য। যদি না কেউ কবিতা লেখে। এই যে তোমাকে তারিফ করতে পারছি না, অথচ অপূর্ব লাগছিল শাড়িতে। এই যে শতাধিক নিরুত্তর মেসেজ। ওদিকে যে বাদামওয়ালা সিনেমাহলের নীচে বাদাম বিক্রি করতো। আজ আস্ত হলটাই ফুরিয়ে যাচ্ছে, সে অসুস্থ। এ সমস্তকিছু কবিতাযোগ্য। কিন্তু আমি লিখব না। চাই না, এই দুঃখগুলো ক্লিশে হয়ে যাক। এভাবে টুকরো হতে হতে যদি ওরা গড়িয়ে যায়, তোমার চৌকাঠ অব্দি, কীভবে মাফ করবো নিজেকে বলতো!
|| আঙ্গিকে কবির গদ্য ৫ ||
মন্তব্যসমূহ