ঋতুপর্ণা খাটুয়ার গুচ্ছ কবিতা | আঙ্গিক



ঋতুপর্ণা খাটুয়ার গুচ্ছ কবিতা


স্থাবর

ব্রিজের তলায়, গোগ্রাসে শিশু গিলে নেয় আধখানা রুটি।


চিরতরে, আধাপোড়া কঠোর চাঁদ চলে যায় রাহুর পেটে।

বারোমাসি গ্রহণে...


আয়ু

আজকের মহামারি, অত বাড়াবাড়ি নয়। যেভাবে হত আমাদের সময়...

এই বলে দাদু হাসে 


দুই দাঁতের মাঝে বিড়ির মত

চিড়িক করে জ্বলে ওঠে জিঘাংসা... 


চিহ্ন

আমার হয়ে ঈশ্বর ক্ষমা চেয়ে নিক। 


ঔদ্ধত্য পোশাক হয়ে ঢেকেছে আমায়।

ক্ষমা চাওয়ার স্পর্ধা আয়ত্ত করিনি। 


তবু, ভোররাতে মা এত্তেলা দিয়ে যায়,

শরীরে বিনয়ের দাগ নিয়ে জন্মেছি।


ক্যান্টিনে বসে লিখছি

টেবিল। প্লেটে শুয়ে রাজভোগ। গোল হয়ে পিঁপড়ের জমায়েতে। ও কি রাজা! চারপাশে মোসাহেব ঘিরে! 


কুরে খেতে আর কত বাকি!


আবারও ক্যান্টিনে বসে লিখছি

চোখে গড়ায় নরম জল। তাতে নোনতা বিষাদ

আর দিনরাতের উপবাসের কণা লেপ্টে থাকে।  

বিলাসিতা করে কঁকিয়ে কেঁদে উঠে দেখি

মায়ের বুকের দুধ জমে পাথর আর পাশে

ফাটা ঠোঁটে লাল গড়ায় ভুখা পেটের শিশুর। 


কত কত দিন শুধু কষ্ট দেব বলে

ভাতের থালা এড়িয়েছি। আজ সেসব

সাদা ভাত জমা হয়ে আসে মনে।

ভাতের গায়ে নীরব প্রার্থনা এঁকে রাখি। 


গায়ের পাশে শোয়া আর ফাটা ঠোঁটে লাল

ঝরিয়ে নিরাপদে ঘুম ছাড়া কিছু চাইবার নেই।


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা