অর্ণব সাহা
মাদমোয়াজেল
১
প্রত্যেক সন্ধেয় তুমি মায়াবী আলোয় জমে থাকো
পাখির পালক এসে জানলা ছুঁয়েছে মনে হয় !
গতবছরের স্বপ্নে দুয়েকটা ঝর্ণা মিশেছিল...
তোমার আপলোড-করা ছবি দেখি অ্যানড্রয়েড
স্ক্রিনে !
আর, খুব নিয়ম মেনে একটাও ছবিতে আমি নেই
ভোরবেলায় ল্যাম্পশেডের নীচে জমে থাকা মৃত পোকা
অসংখ্য, আমি তার একজনও হব না কোনোদিন !
হাজার অপশনের একজন হব না কোনোদিনও...
ফুটপাথ । বিশ্বাসঘাতকের
জিপ ঘুরছে অলিতে-গলিতে...
বিয়ার পাবের জানলায়
কার চোখ দিগন্তকে ছোঁয় ?
ঘুম, শুধু বরফ চারিদিকে !
গতবছরের এই দিনে
যাকে তুমি ছেড়ে এসেছিলে
তার ঠোঁট বাষ্প হয়ে আছে
পারদহীন আয়নার কাচে
শীতকাল ফুরোবে একদিন
গল্পেরা ক্রমশ খুন হবে
৩
অপেক্ষার একটাই রং আমি চিনি ।
সে রং অমনোযোগী । ধূসর । ফ্যাকাশে...
কলকাতায় সিরিঞ্জ ভর্তি রক্ত বিক্রি হয়
কলকাতার মোড়ে মোড়ে কিডনি বিক্রি হয়
ঝড় ওঠে । আকাশদেবতার নীল চোখ
আমার ঘরের শান্তি লন্ডভন্ড করে
মাঝরাতে দরজা খুলি । সিঁড়িতে পায়ের ছাপ
দেখি !
জলপাই-উর্দির মতো মেঘের ছায়ারা
পাসওয়ার্ড ভেঙে তথ্য চুরি করে নেয়
সর্বস্বান্ত । কর্তব্যবিমূঢ় বসে থাকি...
৪
আচমকা গলির মুখে অভিজ্ঞান,
হাওয়া
আহিরিটোলার গঙ্গা প্রতিশোধ
নেয়
মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে ।
কবিতার অফস্ক্রিন
আবার ফিরিয়ে আনছে দু’মাস
আগের
প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা । এক
ছাতার নীচে
মসৃণ ফুটপাথ ধরে রাস্তায়
নেমেছি...
মাদমোয়াজেল, আমি ভুলব না
তোমাকে
তোমার-আমার পথ দু’মুখো,
আলাদা
বুঝতে পারি । প্রত্যেক
মুহূর্তে টের পাই ।
এটা একটা না-লেখা চিঠির
খসড়া
যা কখনও পৌঁছবে না তোমার
দরজায় !
৫
যদি তুমি ভুল বোঝো,
ছন্দে-শব্দে কাটাকুটি খেলো
আমার অক্ষর যদি তোমায়
বিষণ্ণ করে দেয়,
আমি তা ফিরিয়ে নিচ্ছি,
হালকা ইরেজার
কালো শ্লেটপাথরের
ক্ষতচিহ্ন মুছে দিয়ে যাবে
ক্ষুরের ফলায় হাঁটছি,
দু’পাশে পাথর পড়ে আছে !
কী চাওনি ? প্যাশন ?
নীলিমা ?
কী খুঁজেছ ? সাপ-লুডোর
খেলায়
বিষাক্ত জিভ এড়িয়ে মইয়ের
গোড়ায়
পৌঁছে যাওয়া ?
আমি এই খেলার কেউ নই...
রক্তক্ষরণের ভাগীদার ।
খেলনা হতে চাইনি
কখনও!
তুমি ওই মসৃণ পথে যাও
লরেল মুকুটে বেঁচে থাকো...
মন্তব্যসমূহ