হাসান রোবায়েত-এর কবিতাগুচ্ছ | আঙ্গিক
হাসান রোবায়েত
২৫
তুমি আসো যুগে যুগে
কারবালা হয়ে
মিনারে চিলের বাসা
এজিদের ভয়ে
গোখরাও প্রতিবেশী
পড়শি ময়ূর
জেগে ওঠে আশেপাশে
হেরাগুহা-তুর
তোমাকে চেয়েছি, জেনো
তোমাকেই চাই
বিসমিল্লাহ মরে গেছে
বাজে নি সানাই—
২৬
ননদী ধরেছে হাতে
শস্যের ডালা
মাঠে মাঠে ধান নাই
ছায়াকারবালা
জল নাই পানি নাই
নদী শুকে ঘের
ভাসে না জায়নামাজ
শাহাজালালের
দেশভাগে কী যে হলো
মারে প্রতিবেশী
কন্যা ডুবিয়া মরে
হায়! এলোকেশী
২৭
কী যে ভাবি কী যে বলি
বুঝি নাই কিছু
বানেতে ভাসিয়া গেল
জমিজমা নিচু
কী যে ভাষা বলে তারা
যেন বজ্রবুলি
একা চাঁদ মনে হয়
মরা মাথা, খুলি
আমাদের কৃষি নাই
নাই ধানখেত
এনে দাও নদীজলা
মরিবো নচেৎ—
২৮
তোমাকে পিরিত করি
করি গো পিরিত
ঘ্রাণ কি লুকিয়ে রাখা
ফুলের উচিৎ?
ছাতা নাই, হারায়েছ
ভেজো বিষ্টিতে
তোমাকে দেখিয়া মরি
জ্বলিতে জ্বলিতে
তোমাকে পিরিতি করি
পিরিতের জোরে
আর না ভিজিও বঁধু
চুল এলো কোরে—
২৯
লেবুফুলে হেলে রোদ
দূরে দিন যায়
অসুখে দাঁড়ালো ট্রেন
জামের ছায়ায়
নদীবায়ু পথহীন
পশুপাখিহেম
মাকালের পাশে ফোটে
আমাদের প্রেম
ঠোকরায় পাখি আর
হাকাও সময়
তুমি বিনে মহাকাল
এ মাঠে ঘুমায়—
৩০
কীভাবে তোমাকে চাই
বলি নি কখনো
টগরের হাওয়া এসে
মায়া দেয় শোনো
তোমার নামের আদি
শেষটুকু ভুলে
অক্ষহীনের মতো
দশদিকে দুলে
উঠি আর নেমে আসি
ক্ষমা নাই তার
তোমার নামেই ফোটে
ধূসর বিথার
৩১
কীভাবে কী হয়ে গেল
চর ভাঙে রাতে
গোখরা সাপের ফনা
জ্বলে আছে পাতে—
হাড়িতে চাউল নাই
সারা নদী ঘরে
কায়দা-কোরান ভাসে
কালো অক্ষরে
বঁধু গেছে দূর খেতে
তার দেখা নাই
নদীর পানিতে ভাসে
জোসনা-সানাই—
৩২
এত যে হাতাশ লাগে
পানি নাই তবু
কারবালা বানায়ো না
আল্লা, ও প্রভু—
মিলাদ শিরনি দিই
এই খড়া মাসে
মেঘ দাও ছায়া দাও
অন্নের পাশে—
নবীর রওজা চাই
চাই পীর-অলি
একতারে বাজে যেন
আমরা যা বলি—
____
প্রথম প্রকাশঃ আঙ্গিক অনলাইন
মন্তব্যসমূহ