অভিমন্যু মাহাত-র কবিতাগুচ্ছ | আঙ্গিক
শারজম
সেই মুহূর্তকালে বিহ্বল, তোর আগমনের সংবাদে,
গলা ধরে আসা--অতল। মিনিট কয়েক পরেই শুনি,
অস্থির ক্রন্দনধ্বনি
দু'হাত মুঠো করে যখন দেখলি--অবাক পৃথিবী। তোর পাশে কল্পনাহীন, দাঁড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ।
তোর প্রথম চাহনি, দোভাষী খুঁজি---
কেঁপে উঠি ঘটি জল হাতে। তারপর
পদব্রজে নামি ঝাড়গ্রাম বনে
ফাগুনে এসে দাঁড়িয়েছি, আজও বহে প্রাণ---
জাগতিক কামারশালা মৌন থাকুক অযুতকাল।
ঋণবায়ু ছায়া ফেলে জাতকের ললাটে
আমন্ত্রণ
কালো জলে ইচ্ছে ভাসিয়েছি...
শীর্ণ পাতায় আমন্ত্রণ--
আজ নত মুখে আমিই আহত, পরাজয় মানি।
এই মরশুমে জমজ শীতকাল এসেছে যেন
অসংখ্য যুদ্ধ-বাহিত রেণু। দূরত্ব ঘোষণা তোমার?
ক্রমশ সেই জলের দিকে হাঁটি
সেই যেন পুরাতন স্রোত, চোখের আদর
বিষণ্ণতা মাপা ছিল চাঁদের বিকেলে
তারপর কয়েক দিনের আয়ু, তোমার স্নান ছিল বাকি
সব কি অতীত?
যে সরষে খেতে হলুদ-উন্মিলন
তার নামে অজস্র সন্তাপ। এখানে আমন্ত্রণ--
প্রিয় ভাগীরথী ঢেউ দিয়ে যাক
খরার রাঢ়ভূমে। আর
শীতের কাহিনীতে অবাধ্য জ্বর দিয়ে যাও
রিমিল
হ্যাঁ, টের পাচ্ছি
যাকে রাত বলে ডাকো তোমারা
রাতে একটু লবণ চাইছে স্বাদহীন জিহ্বা।
বুঝি এখন বর্ষাকাল,
তাই লিরিকে গুঁজে দিয়েছ সমুদ্রগান?
গান শুনে হয়তো বাঁক নিতে পারি--
অচেনা সৈকত-সরণিতে। কিন্তু কে শোনাবে গান?
অচেনা মুখের ভিড়। সাজানো ভিড়ে অন্যের স্বর
যে নামেই ডাকো এই জনপদকে
খালি পায়ে চলার শব্দে ভাঙছে একটার পর একটা রাত
বিপরীত
তারপর ডুঙরিধারে পড়ে আছে সেই পরব
তোমার ব্যক্তিগত দিনলিপি, অসহিষ্ণুতা
এবং জঙ্গলধারে গরাম থান, দুরাকাঙ্খা
ঐ যে একা ময়ূরবাহন ঘুরছে অকালে
তার আশে পাশে ততখানি খরতাপ নেই
পদযুগল মেপে বসন্তদিন চলে গেছে
আঁধার খুঁড়ছে পাহাড়ের মন, পছিম আকাশ
তুমি যতটা সংগোপনে সজল, বিরহী
ততটা উদাসীন হলে না রাঢ় নদীপাড়ে
ভাতকাপড়ের বায়ু তবু বিছানো রইল
____
প্রথম প্রকাশঃ আঙ্গিক অনলাইন
মন্তব্যসমূহ