ব্রততী ব্যানার্জির কবিতাগুচ্ছ | আঙ্গিক অনলাইন
কবিতাগুচ্ছ/ ব্রততী ব্যানার্জি
সেলাই মেশিন
এভাবে জলে ফেলে দাও
ছোটো পাথরের অভিমান
সে বাধ্য হয়ে গোলাকারে ঘোরে
ঘরে চাল নুন না থাকাই দারিদ্র্যতা নয়
বছরের পর বছর ছেলেকে যে
একটাও জামা কিনে দিতে পারছি না
একথা কবিতা লেখে না কেন
পুরনো সেলাই মেশিনের সাথে পায়ের ওঠানামা
বাঁকুড়ার গরমে আমি নুন হয়ে উঠছি
এখন আর সমুদ্র দেখার লোভ নেই
গন্ধেশ্বরী
সম্ভাবনা সংশোধন করে এসো
যদি কিঞ্চিৎ পাবার আশা থাকে
তবে এই কাটফাটা শহরের নামে
দিব্যি দিয়ে বলো, ‘তোমার বুকে
যমুনা এসে বসুক এই ভাদরে’
আমি চুরুটের নামে শপথ করে বলছি
‘আমার কোনো ঘর নেই’
এই কথাটি বলতে বলতে আমি রোজ রাতে
চার দেওয়ালের মাঝে অপেক্ষারত
নারীর কাছে ফিরি
উত্তরপত্র
এই যে এত কথা উগড়ে দিচ্ছো
রোজ পাতা পাতা লিখে ফেলছো
অথচ একটি উত্তরের শব্দ সংখ্যা
গুলিয়ে ফেলছো বারবার
আমি নিতান্তই এক পরিদর্শক
কক্ষে কক্ষে ঘুরতে থাকা আমার কাজ
দেখা ছাড়া আর কী বা করতে পারি
কানামাছি
ধরে রাখলে সম্পদ
ছেড়ে দিলেই জীবন
এইভাবে ধরতে আর ছাড়তে শিখে নিতে পারলে
তুমি বৃত্তাকারে সোজা হাঁটতে পারবে
পারা আসলে ভ্রম
ঠিক যেভাবে চোখ বন্ধ করলে তুমি দেখতে পাও
তুমিই একমাত্র সত্য
সত্য আসলে পাশাপাশি বসিয়ে রাখা কয়েকটি মিথ্যা
বাড়ি
একই দুঃখ নিয়ে আর কত লেখা যায়
সেই তো পিছল রাস্তা, বারবার হাঁটা;
হাঁসেদের যুদ্ধ নিয়ে ভাবা
আর কিছুটা সাবধানে স্মৃতি মুছে দেওয়া
খোলা হাতে বাড়ি ফিরি
সেই কবে থেকে বাড়ি ফিরছি
শুধু একটি চৌকাঠ পেরোতে পারছি না
মন্তব্যসমূহ