দেবাদৃতা বসু-র কবিতাগুচ্ছ | আঙ্গিক অনলাইন
বেপাড়ার কবিতাগুচ্ছ
দেবাদৃতা বসু
এক
ছুটি ফুরোনোর আগেই শেষ হয়েছে খাতা
পাতা উল্টে দিয়ে
খেলার মাঠ জুড়ে শাড়ি মেলে চলে গেছে বউ
মাঠের অন্যদিকে তার সংসারে
দাঁত মাজতে মাজতে বেলা হয়ে গেল
প্রতিদিন এত আওয়াজ
চোখের সামনে ক্রমশ ছোটো হচ্ছে পৃথিবী
ছাদে উঠে দেখো
স্লাইস কেকের মিছিলে আইসিং চাইছে একটা লোক
আর অনেকটা দূর থেকে বৃষ্টি আসছে
দুই
নীলের ব্যকড্রপে কাটাকুটি
ঘুড়ির ওজন বৃদ্ধি হয়েছে
এমনই ওষুধের গুণ
প্রাকৃতিক নিয়মে কেমিক্যাল ঝরে যাচ্ছে
যেভাবে বৃষ্টি হলে
মানুষ মুখোশ পরে নেয়
ঘর বানায়, বাড়ি
বাজ পড়ার আওয়াজ হলে
দেবতারা ঢুকে যায় ঘরে
প্রসাদের শুদ্ধতা নিয়ে
তিন
ক্ষমা চাওয়া ছাড়া কিছু নেই মানচিত্রের
একটা বর্ডার পার করলে নতুন বর্ডার তৈরি হয়
খামের ভেতর যেভাবে ঘুমিয়ে থাকে চিঠি
আর কখন হাতবদল হয়ে যায়
বল খেলার মাঠে ছেলেরা
জনবসতির ভেতর জলের লাইনে কোলাহল
আমলকির গুণসমৃদ্ধ শুকনো খাবারদাবার
গরম তেলে ছেড়ে দেওয়া ব্যাটার থেকে
ছিটকে যাওয়া যে টুকরো
অনায়াসে কড়াইতে ফেলে আসা যায়
তার ব্যক্তিগত হাতাশার ভেতর
লোহার গায়ে স্টিল ঘষার শব্দ
যতক্ষণ জলের দাগ
ট্রিগার ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে নির্দিষ্ট আঙুলের কাছে
চার
প্রিয় ঋতু নিয়ে গল্পের আসর
সন্ধে হল
শীত এসে গা ঘষে দিল গায়ে
আমার গা, তোমার অথবা তাদের
বা বেপাড়ার সবার গায়ে শীতের চাদর চাপাচাপি
গা থাকলে ক্রিমের আর দোষ কী
মাখতে মাখতে নেশা কেটে যায়
খোলস ছাড়াবার সময় হয়েছে
তবু এই বয়সেও পরিবার শব্দের মধ্যে কত চমকে ওঠা
সঠিক মাপের একটা জুতো খুঁজে পাওয়ার আগেই বার্ধক্য আসে
ঘুম ভেঙে দেখি আরও একটা প্রজন্ম শীতে কাঁপছে
মন্তব্যসমূহ