রূপক চট্টোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ | আঙ্গিক অনলাইন
রূপক চট্টোপাধ্যায়
এক
একটা সিঁড়ি উঁচু হতে হতে
জিরাফের বংশানুক্রম স্পর্শ করলো।
একটা সম্পর্ক দূর হতে হতে
আলোকবর্ষ ছাড়িয়ে গেলো।
তবুও বৃষ্টি হয়। সোঁদা গন্ধ লাগে। চোখ মুছে,
নিম সন্ধ্যায় দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাকে
অনন্ত কালের নারী। কেউ আসবে হয়তো বা
গেঁয়ো পথের অসুখ বুকে করে!
দুই
বাক স্বাধীনতা পেয়েছো বলেই এ চিৎকার।
না হয় গুনগুন করে
দু-খণ্ড বিরহের গান গেয়ে
পাশ ফিরে শুয়ে পড়তো নদীটাও।
তিন
পুরুষ এলোমেলো হলেই মানায়।
নিয়মের কাঁটাতার ছিঁড়ে
ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়,
উঠে দাঁড়াতে হয় বিষাক্ত ফনার আগে।
তারপর তো সব বেহুলা সামলে নেবে!
চার
তোমাকে দ্রবীভূত করবো বলে
কত না শ্রাবণ আছড়ে মেরেছি
তোমার নীলাভ স্নান ঘরে!
এখন নিজের স্নাপ্ত দেহ দেখে
মনে মনে নদীমন্ত্রে সম্মান জানাই
তোমার মৌনতাকে!
পাঁচ
ছাদ থেকে মেলে দিচ্ছো হলুদ শাড়ি।
ঠিক যেন হলুদরং নৌকাটি।
শহর জনকল্লোল সমুদ্র! বানিজ্য জ্বর।
আমাদের এখন নাব্যতার বয়স।
শুনশান ফেরিঘাটে
একটাও দিনগোনার দুপুর শালিক নেই!
কী বলে যে তোমায় প্রেমের প্রস্তাব পাঠাই।
তারচেয়ে চলো হিম মৌনতায় বাকি কটা দিন
কুয়াশা বুনতে বুনতে পার করে দিই!
ছয়
যারা এসেছিলো
সবার ইচ্ছে ছিলো, দু-চাট্টে দিন থেকে যেতে।
হাত ঘড়ি রোদচশমা খুলে
মুখে হাতে জল নিয়ে
পা ঝুলিয়ে বসতে দিগন্তের দিকটায়!
সাদা ভাত কাপড়ের আড়াল দিয়ে
জীবন দেখে, আর
মাঝে মাঝে উঁকি দিয়ে ডাকে
“কইগো দাও খিদিয় পেট যে জ্বলে যায়!”
অথচ কেউ লক্ষ্যই করেনি
তাদের ঘড়ির কাঁটাগুলো
তীক্ষ্ণতায় তাক করছে তাদেরই কলজে নাচন
দিনে দিনে ক্রমশই শ্বদন্ত হচ্ছে মেঘ!
মন্তব্যসমূহ