কবিতাগুচ্ছ | পলাশ দাস | আঙ্গিক পত্রিকা

গাণিতিক

চাঁদের আলোর শীতে

দরজা আর দু’কপাট

চৌকাঠের ভিতর

পিঁপড়ের গাণিতিক সংসার

খুব চাপা স্বরে ফিরে যাচ্ছে হাওয়া

স্থির রাতের শব্দেরা


পুকুর

স্পর্শহীন জলের চারপাশ ঘিরে

সভ্যতা ও ভ্রাম্যমাণ রাস্তার দু’ধার

বকুল ফুলের রঙে পায়ের চিহ্ন

হু হু বাতাস

জামরুল গাছের মাথায় থমকে থাকা সাদা গ্রাম

দু-একটা মানুষ উঁকি দেয়

আমরা তারা বলে ভুল করি

মুখ ফেরাই স্পর্শহীন জলের অতলে ফিরে ফিরে যাই


পাখি

শীতকাল কয়েকটা পাখির নাম লিখে রাখে

আমরা সেই পাখিদের পালক খুঁজে বেড়াই

তারই বিমূঢ় শরীর জুড়ে

কখনও থমকে দাঁড়াই

পথ খুঁজি, জঙ্গলে যাই

পাতা, কাঠ কুড়িয়ে নিয়ে আসি

বিষণ্ণতা পুড়াই আগুনে

শীতকাল চলে গেলে

পাখির পালক জুড়ে ছাই পড়ে থাকে


সন্ধ্যা

দিন আর রাতের মাঝে দাঁড়িয়ে দেখেছি

বিস্তৃত শূন্যতা বসে আছে


হাঁটু মুড়ে নয়, ঘাড় গুঁজে নয়

হাত - পা নড়ছে, মাথা তোলা

এলোথেলো চুল গুছিয়ে নিচ্ছে

মাছের লেজের মতো বিনুনির রঙে


ছায়ামানুষ

দু’হাত চিত করে রেখে আকাশের ছায়া ফেলে যে মানুষ

তার বাঁকা নাক, উসকোখুসকো চুল, চোখের দু’পাশ জুড়ে

কুয়াশার আস্তরণ

মাসাধিককাল স্নান না হাওয়ায় তার ত্বক জল চায়, জল

সমস্ত ঘর্মগ্রন্থি ভিজে যেতে চায়

দ্বিধাহীন নরম জলে

তাই সে একদিন বিশুদ্ধ কুয়াশা চিঁড়ে নেমে যায় জলে

আর ভোর হলে ব্যস্ত শহরের দিকে চলে যায় পথ

তার কোনো খোঁজই রাখে না আকাশের ছায়া না দেখা মানুষেরা

সে তখন অতল জলের ভিতর স্নিগ্ধতা খুঁজে খুঁজে ঘোরে

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা