দীপেন্দু পালের গুচ্ছ কবিতা | আঙ্গিক
দীপেন্দু পালের গুচ্ছ কবিতা
এটাই কি অহংকার?
তোমাকে ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমার শান্ত দিনের
মুখগুলো,
এখন ক্ষুদে শরীর,
মহানগর দেখতে যাবে,
বাবার কাছে হাত পেতে একটা দুটো জুতোর বারি;
আরো বেশি মানুষ হতে
দেয়ালের গর্ভ থেকে উঠে আসা অন্ধকার,
যে পাশায় জীবন বাজি গেলো,
আজ তাতে মাকে হারাবো।
কিছু সকাল শুরুর আগেই বিপুল বিপ্লব করবে,
কিছু অপান কুহক স্মৃতি, পান্তাভাতে নৈবেদ্য।
হ্যাঁ আর না-এর মাঝে ঝুলতে থাকা চিতায়,
আমি কি আকারবিহীন সস্তা মাগী?
বাড়লো যন্ত্রণা এইবার,
এইবার খুনের আগেও নিজেকে আয়নায় ধরা দেওয়া হলো না।
যে রেখা আয়ুষ্কাল ধ্বংস করছে,
তাকে চোখের মতো উপড়ে ফেলার ইচ্ছা হবে।
সে বীর্য ছুটে যাবে তোমার দর্শনকে আরো বেশি বেশি
গর্ভবতী করে দিতে।
আমি সব কিছুই পারি, অহংকার করা ছাড়া।
এটাই কি অহংকার?
দুঃখরা তীর্থযাত্রী
যতবার হল রক্তপাত; শিখণ্ডী অভিশাপগুলো দুঃখ হয়ে ঝরে পড়লো,
এমনও খানকি বেশ্যা রাতে আমি চললাম ঘর-বাড়ি ফেলে।
তোমার নামে দেবতা আসছে দৈনিক।
মরা মরা স্মৃতি,
মস্তিষ্কের সীমারেখা; তা পেরোলেই ভস্ম হচ্ছে দুঃখগুলো।
এই কুরেমি। অবজ্ঞা।
এই অবৈধ সম্পর্কে আমি জড়িয়ে তিনটে বছর।
কেন জানি আর কেনো জানি না তাও জানি,
তাও তো দেখো বেদজ্ঞানের ঊর্দ্ধে আমার
তোমার সাথে থাকাটা যেন একাকিত্ব আর শূন্যতার মতোন।
সে চড়ে বসে মাথার উপর
রোজ বারোটায় তাকে দেওয়া হয় প্রশয়।
ভয়ঙ্কর থেকে ছাড়া পাওয়া সুখের কাছে মাথা নত।
আমি সেই গাছটাকে ভিড়ের মাঝেও আলাদা করতে পারতাম।
এভাবে কেউ এখনও আমায় আলাদা করেনি।
যখন অস্ফুটে আমি বলতে পারি–
তখন উচ্চতা পায়নি শরীর।
তখন নরম শরীর সদ্য প্রতিমা– ধ্বংস হওয়ার লোভ বোঝেনি।
সেই তীর্থপথের শেষে মৃত্যুর আশঙ্কা–;
সবাই জানতাম তাও গেছি।
তা জীবন ছিল।
নিজের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস
এবং এই ধাতস্থ শরীর গুঁড়িয়ে দাও– মেঘের মত প্রকাশের আগেই বৃষ্টি আসুক,
আমাদের শেষ থেকে উঠে আসতে হবে।
কত ভিজে মাস্তুল ডুবে যায় চেতনার জলে।
হ্যাঁ তুমিও পারো বিজয়ী ব্রহ্মাণ্ড তুলে নিতে মাথায়।
বাস্তব রঙের চাদরে শরীর বেরিয়ে যাচ্ছে,
জটিল সন্ধিবিচ্ছেদে কাটা পড়ে যাবে ঋতুমতী দেহটা।
সেভাবে সবাই হল রাজা,
সবাই ভালো থেকে কীভাবে হয়ে উঠলো;
প্রিয় দানব। জানা নেই। আমার জানা নেই আজও।
অপরাহ্নে যে সৌরজগতের মাথায় আমাদের চড়ে বসার কথা ছিল,
তা ভিখারি সভ্যতা টের পেল,
আমি প্রস্তুতি মঞ্চে দড়িতে আটতে পারিনি নিজের গলা,
নিজের অমানবিক শৈশব থেকেই যৌবন শিখে নিল–
কীভাবে হত্যা করতে হবে নিজেকে।
এখন মস্তিষ্কের দরজায় তালা ঝুলছে।
সেই চাবির সন্ধান সারাটা শিরা উপশিরায়।
তোমার ভাতার আসবে তা খুলে আমায় মুক্তি দিতে।
যে সন্ত্রাসের জন্য আজ ঘুম ভেঙেছে;
অনেক পড়ে বুঝেছি–
তা নিজের বিরুদ্ধে ছিল।
স্মৃতি পাঠাও
স্মৃতিতে যে কুকুর
ডাকছে
তার গলার স্বর আমি স্পষ্ট চিনি।
এভাবেই সে ডেকে ওঠে
নিজের যুদ্ধবিমান থেকে বোমাবর্ষণের সময়।
সেই ঝলসে যাওয়া শরীরটায়–;
মায়ের কংক্রিট স্নেহ।
খিদের মতো অভিজ্ঞ–আভিজাত্য–অভিজ্ঞতা
যেনো আমার রক্তেই ছিল।
অনাবৃষ্টি,
অস্বীকার আর অভ্যাস।
সব চাদর ধর্মের হয় না।
সব ধর্মের উপাসক দেবতা হয় না।
নিজেকে মারবো বলেই
এই
চিতা তৈরি হচ্ছে আজ;
এভাবেই হাজার
পৌত্তলিকতার ভাঁড়ার
থেকে পালিয়ে–;
আমি সে মানুষগ্রহে হারিয়ে যেতে সক্ষম; গাড়ল।
সব প্রশ্নের একটাই উত্তর;
যে যেখানে আছো আমাকে স্মৃতি পাঠাও।
মন্তব্যসমূহ