মনোজ দে-র সিরিজ কবিতা | আঙ্গিক
মেমোরিয়াল/ মনোজ দে
১)
কোনো খেদ নেই
গতকালের প্রসঙ্গ খুঁড়ে বের করি
বন্ধুদের মাতোয়ারা থেকে ভীষণ গোপনে
ঢুকে পড়ি নির্জনতার ভেতর
দীর্ঘ বক্তৃতার মতো রোদ
আড়ালের খোঁজে সেই যে বেরিয়ে পড়েছিলাম দুজনে
ভীষণ কলকাতার কালগর্ভে
আমরা আজ গৃহহীন প্রেমিক-প্রেমিকা
২)
কিছু একটা লুকোতে গিয়েই ভুল হয়
প্রকাশ্যে দাঁড়াতে পারি না সম্মুখে
তাই রোদ পার হয়ে, অবশিষ্ট গাছের তলায়
শুনে ফেলি ভবিষ্যৎ
অজস্র সোমবার সেখানে
বেলা দশটায় ঘুম থেকে ওঠার পর যে রুদ্ধশ্বাস
আমি তাতে সংগোপনে ভাত সেদ্ধর নির্যাসটুকু রেখে দিই
৩)
কীভাবে যে রাজি হয়ে গেলে!
সেভাবে প্রস্তুতও ছিলাম না
নির্ধারিত সময়ের আগে এবারও হাজির
তবে এই প্রতীক্ষা অন্যরকম, ভয়হীন
মোহরকুঞ্জ পেরিয়ে হেঁটে যাচ্ছি
ঠিকানা হারিয়ে ফেলেছি, বাস্তবতাও
ওই যে কম্পাস দোলে, পরী দেখা যায়
সামান্য অর্থের বিনিময়ে, ওপারে এমন যাদুবাস্তবতা
মফস্সলে কোত্থাও, কোত্থাও দেখি নাই
৪)
বাঁধানো সিঁড়ির পাশে বসি
পুকুরের দিকে চেয়ে শুরু হয় গল্প
দুপুরের খাওয়া, বাড়ি ফেরা — সমস্ত আলাপ ফুরিয়ে এলেই
আরও কিছু পাশে যাই। ছোঁয়া লাগে তোমার আঙুলে
এই ভান হয়তো তোমারও খানিক চেনা
তবুও দিকশূন্য হয়ে দেখি, তোমার চোখের মাঝে
আমার হলুদ অবয়ব তিরতির করে কাঁপে
৫)
ছেলেটি হঠাৎ আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল
যেন কিনে নিই একটা অন্তত গোলাপ
কতই বা দাম ছিল তার! জিজ্ঞাসা করিনি
এখন অনুশোচনা হয়! এত ভিড়
তবুও তো আমাকে সে ভেবেছিল তোমার প্রেমিক
৬)
মাথায় রেখেছি হাত
এই বিজ্ঞাপনে ভরে যাচ্ছে কলকাতা
তুমি তো এমনই ছিলে
নাগরিক ছুতো থেকে তুলে আনি
দৃশ্য দিয়ে বানিয়ে সংলাপ
দেখি, এই প্রথমবার মার্চের সুদীর্ঘ দুপুর ছোট হয়ে আসে
মন্তব্যসমূহ