প্রতীক মাইতির গুচ্ছ কবিতা | আঙ্গিক



প্রতীক মাইতির গুচ্ছ কবিতা


পরিবার

ধোঁয়ায় ঢেকে বসে আছি। গুমো আঁচে চ্যালা কাঠ গুঁজে গুঁজে দিচ্ছে বড়দা, বড়বৌদি, পিসি, ফুলকাকিমা। খসখসে ফুটিফাটা বঞ্চনা, থকথকে কালশিটে দুঃখ গালে - পিঠে - জঙ্ঘায়। এসব কাউকে দেখতে দিলে হরিধ্বনি দিতে দিতে তুলে দেবে চিতায়।

চিতা তো চারদিক খোলা রঙ্গমঞ্চ। নাড়ি ফেঁসে ছিটকে পড়বে জল সংলাপ হয়ে। খুলি ফেটে ঘিলু বেরোবে কৌতুক হয়ে। এইসব কাউকে দেখতে দিলে হাততালি দিতে দিতে তুলে দেবে স্বর্গে।

বাবা শুধু দেখছে ধোঁয়ায় ঢাকা আমাকে, বংশে সিদ্ধপুরুষ হয়ে এসেছি আমি।


জঙ্গল ও পশুরাজ

জঙ্গল দূরে সরে যাচ্ছে বলে

হাতে পায়ে জড়িয়ে নিয়েছি লতা- গুল্ম, বুকের খাঁচায়

পাইন - দেবদারু


এরপর একদিন শিকারির বেশে তুমি এসো

দয়ালু গর্জন করে অভ্যর্থনা জানাবো তোমাকে

দক্ষিণের বারান্দায় অনাবৃত রাখবো

নিকানো ঊরু, বুকের দু'খাবলা নরম মাংস

আর

রক্তাভ কানের লতি


জঙ্গল অব্দি নরম জ্যোৎস্নার একটা সেতু চলে গ্যাছে

ভূর্জ - চন্দন মেখে বসে আছে এক প্রেমিক

তোমাকে তার কথা বলা যাবে না।


একটা রূপকথাময় কবিতা

ঈশ্বর যখন সুখী ছিলেন সম্ভবত একটা শয়তান বানিয়েছিলেন প্রথম

নিখুঁত চোখ, ঠোঁট, চিবুক

শরীর জুড়ে পারফিউমের গন্ধ

ঈশ্বর সুখের আবেশে ভুলে গিয়েছিলেন শরীর নয়, মন আসলে পৃথক করে মানুষ উত্তম না অধম


এরপর ঈশ্বর ঘুমিয়ে পড়লেন

ঘুমের মধ্যে রূপকথা এলো, এলো বেহস্তের রাতপরী,

নেশায় ডুব দিলেন ঠোঁটের, নাভির, বুকের, অর্থের ছড়াছড়ি

.

.

.

.

ঈশ্বর হয়ে গেলেন শয়তান, শয়তান তখন থেকে ঈশ্বর-ঈশ্বরী।


জরুরি অবস্থা

শহর থেকে খবর আসছে অবিরত -

রাজপথে, শহিদমিনারে, সবথেকে উঁচু বাড়িটার কিনারে জড়ো হচ্ছে মোমবাতি হাতে মানুষ 

ইরাকের আকাশে উল্কার মতো খসে পড়ছে মিসাইল 

দিল্লি থেকে একদল জেহাদি বলে উঠলো - লড়কে লেঙ্গে আজাদি 

ফেসবুকে ততক্ষণে উত্তেজনা - কেউ নো ক্যাব, নো এনআরসি,

কেউ হর হর মোদি


শহর থেকে খবর আসছে বিদ্যুৎবেগে - 

হাসনাবাদের বুড়িপোতায় কালভার্টে বসে বিড়ি ধরালো চারটে ছেলে 

হাঁফ ছাড়লো 

উফফ চরম মজা পাইছি 

মেয়েটাকে এবার জ্বালিয়ে দে!

মন্তব্যসমূহ

Pralay বলেছেন…
এক বারে এক জায়গায় অনেক গুলো কবিতা, বেশ লাগলো, এভাবে আরও এগিয়ে চলুক সময়ের সাথে
দীপায়ণ বলেছেন…
ভাল লাগল ভায়া।

জনপ্রিয় লেখা