করোনার দিনগুলিতে প্রেম এবং অন্যান্য কবিতা | হিয়া মুখার্জি | আঙ্গিক


করোনার দিনগুলিতে প্রেম


অসম্ভাব্য একটা ভিউ পয়েন্ট

আর টিনের চেয়ারের প্রসঙ্গ

মানেই

অসম্ভাব্য দুটো অপেক্ষা। 


খাদের ও প্রান্তে তখন সনাতন সূর্যাস্ত

আর সাইপ্রেসের নাজুক ওঠানামা

টংলিঙ টংলিঙ গোছের চিরায়ত ট্রিপে 

বিবর্ণ ইন্টারসিটি কাঠপুল পেরোচ্ছে 


দুই ধরনের নৈশব্দ্যের ভিতর

অসম্ভাব্য এক অন্ধকার তখন 

মামুলি ম্যাজিকের মত

তার টুপি খুলে রাখছে।


মাগরেবের শেষে যেভাবে

রিরিউং এ জল কেঁপে ওঠে 

সেভাবে, বহুদূর থেকে 

অস্ফুটে মোহিনী লবজে

ডেকে ওঠে কে ও! 

কার নাম! 


এক অস্বস্তি তখন 

আরেক অস্বস্তিকে ডেকে

জাইলোফোনের সুরে

কফি অফার করে।  


আর 

তৃতীয় এক অস্বস্তি 

ভিউ ফাইন্ডার থেকে চোখ নামিয়ে ভাবে

এই অসম্ভব ফ্রেম

আর কয়েকটা কষ্টকর স্তবক ছাড়াও

বেশ মসৃণভাবে 

তাদের সভ্যতা টিকে যাবে।



ক্যামোফ্লাজ


দেল্যুজ না শিখেই

তোমার ঘরে এসেছি। 


এই চিপশার্ট, রাঙতার জাফরি 

এই কুমারসম্ভব আর প্রুশিয়ান ব্লু

খোলা চুলে গুঁজে 

আচমকা এভাবে চলে আসা

খানিক অভূতপূর্বই


দেখলাম

তোমার শ্মশানে সেদিন

এক অলৌকিক আলো। 

মাস্তুলের নীচে 

তোমার না-কাবিলে-বরদাস্ত

চিরায়ত ধুকপুক-

তাও দেখলাম। 


চোখ ঝলসানো রোদে

ওই ঢেউ

ওই কসমিক উপেক্ষা

ওই খোলা বোতামের জন্যই যে শুধু 

যক্ষিণীর মত 

এতদূর আসা যায়

তা তুমি এখনো জানো না। 


সম্ভবত সে কারণেই

নুমাইশের এই নিঃশংসয় রোদে

সাবধানী পা ফেলে 

দেল্যুজ না শিখেই 

ডাইনির মতো

আমি তোমার ঘরে এসেছি



আনটিল দ্য সি শ্যাল ফ্রি দেম


কোহেন শুনে থাকলে

একদিন না একদিন, বাধ্যত, 

তোমাকে আসতেই হবে


মোগলসরাই এর অলৌকিক ভোরে

বিবশ কারশেডে

ধ্বস্ত টিন ফয়েল শুঁকে শুঁকে 

নিজের দু একটা আঙুল

কেটে না ফেলতে পারলে 

তোমাকে আর কেউ চিনতে পারবে না।


অপাপবিদ্ধ স্ট্রোবে

এইরূপ শ্বাসরোধী ব্যান্ডেজ ড্রেস

(ঘোর ক্রিমসন)

তোমাকে মানায়। 


এই যে

বিয়াল্লিশতম বার বিচ্ছেদ শিখেও

মৃত্যু অভ্যেস হলো না

এই যে চরাচরব্যপ্ত রঞ্জিশের ভিতর

কার্নিভালের ঢঙে

নিজেই নিজেকে পোড়াচ্ছো অবিরাম...


...ঘোর প্রফেটিক 


কোহেন শুনে থাকলে

বিভ্রমের মত 

আর্লসের ওই হলুদ বাড়ি

আর সেই তেষট্টি দিন

তোমায় ঘুমোতে দেবে না। 

মাথাখারাপ করা আকাশে

ঈশ্বরের বিবর্ণ আঙুল 

তোমায় ঘুমোতে দেবে না 


কোহেন শুনে থাকলে

একদিন না একদিন, বাধ্যত 

ঝলমল ক্রুজের ডেক থেকে 

অন্তত বত্রিশ ফুট গভীরে 

ঝাঁপ তুমি দেবেই। 


ডুবতে ডুবতে

যতক্ষণ না পুরোদস্তুরভাবে

চামড়া খসিয়ে 

একটা জ্যান্ত অন্ধকার হয়ে যাচ্ছো

ততক্ষণ, বাধ্যত, তুমি

নিজেকেও চিনতে পারবেনা

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা