অভিমন্যু মাহাত’র তিনটি কবিতা | আঙ্গিক


জন্ম

 

তোমার হাতে ক্ষত। এই অংলো ক্ষত দাও আমার কপালে।

আমি মেঘের মত মৃদু ক্ষত সহ্য করতে পারি না। সাহসী হয়ে উঠি অরণ্যে।

তোমার সূক্ষ্ম গলা থেকে উদ্দীপনা।

সমুদ্রের কক্ষপথে এক ক্ল্যাম হিসাবে তুমি নারী।

আমিও দেখেছি তোমার ঈর্ষান্বিত চোখের বায়ু। আর

আমার নাড়িতে নাচ। নাচ বিদেহী তরঙ্গের। এবং আমি দাঁড়িয়েদাঁড়িয়ে আছি বালির স্রোতে।

রক্তের মতো  জমা হচ্ছে কিছু। 

শনিবার সকালবেলা বৃষ্টি হল। মহুল পাতার মাধ্যমে কই ছায়া এলো না তো

হাতের কোষে উষ্ণতা এল কিআমার অনুধাবন হয়ত ভুল। এই চুম্বন ক্ষত আমায় বিরক্ত করে। নির্বোধ হই।

এখন আমাকে লুকিয়ে রাখো। যখন রাতের শিশু এই নগরকে ঘিরে থাকবেআমায় শুনতে হবে না রাধাজন্ম।

এই বিকলাঙ্গ কোষ আবার হবে। আমায় পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দাওহে মারাংবুরু।

নগ্ননিষ্ক্রিয়সন্ধ্যাতারার সেই নিঃশব্দ জন্ম।

 

 

সিরাঞ-২

 

হে শত্রুমহাবিষুবের কোল আর চাই না। শ্রেষ্ঠ ‘ভালো’ থাকার হৃদস্পন্দন বন্ধক রাখলাম। বিষাক্ত করে গেলে আমায়শুধু সৌরবাতাস লুন্ঠিত হল না। উড়ন্ত বাতাসে বীজের ডাকাডাকি যেন মাঘবরণ। স্নানের মতো কতো মিথ্যাকাঁচাপাকা চুল থেকে বিবাহ। উকুনবাস্তবের খেলায় অশান্ত মীন দলের লাফ। অথবা বিচ্ছেদ মামলাধুলোঝড়। নশ্বরতায় প্রতিটি মিথ্যের শেষে দিয়েছ খণ্ডযুদ্ধের সন্দেহবাতিকতা। পাঁচিল টপকে এলো মানসিক রোগ। অন্ধকারে হুসেন- হাসান মানবজমিন। 


এই নাগরিক ভাতের থালা থেকে আমি পালিয়ে যাব। স্তব্ধ চাষের ক্ষেতে মন্দির বা শ্রাবণমেঘ আর চুরি হবে না। প্রিয় পাখিরা ছাদের কার্নিশ থেকে পৌরাণিকে উড়বে। আমি নকশা ছিটাবো না বাগানেঅভিসম্পাতও না। শুধু পানপাত্র ভেঙে দিয়ে প্রতিদিন ঘুমোতে যাব



দুয়ারি

 

তুমি যেদিকে যাবে, তার অনুসারী

বহু রথ, পদাতিক দেখে আমি সহচর

 

চাদর মুড়ি দিয়ে গৃহবন্দি থেকেছি ক্ষণকাল

সহসা, জানলা খুলে দেখি  দুয়ারি তুমি

বালিকার পোশাকে কেঁদেছো, বসন্তদা জানে।

বিষণ্ণতার সাঁকোয় জমেছে হলুদ শিশির

 

নির্লজ্জ জাতীয় সড়ক ভিজিয়ে দেয় তোমায়

সেখানেও উলোঝুলো এক বৃক্ষসভা আছে।

বিনিদ্র রাতে পুড়ে যায় লৌকিক ক্লাসরুম

অফুরন্ত জ্বর ধুয়ে দেয় মেঘপটের ক্রোধ

আব্রু সরানো সেই তিলাবনির চাঁদ ওঠে

তোমার ভ্যাঙচানো চোখে রিবন দোলে

সহসা, দুয়ার খুলে দেখি দম্পতির শব্দ...

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা