মণিশংকর বিশ্বাসের তিনটি কবিতা | আঙ্গিক


শিশমহল


যে কোনো লেখার আগে তোমাকেই মনে পড়ে।


দীর্ঘ এক পথ, যার একদিকে গোরস্থান— 

অন্য দিকে মেঘলা আকাশ, অল্প কিছু চাঁদতারা —

তঞ্চকতার মতো ফুটে আছে ঘাসফুল, ব্যবহৃত বেলুন—

সরল মানুষ গ্রামদেশে, ব্যাবহার জানে না তাদের—

সারাদিন দৈত্যাকার মাকড়সা এক সূর্য, মাথার উপরে—

সেও জানে কখন কোথায় চলে যেতে হবে—

ফলে এই রাত্রি— আঞ্চলিক মহাফেজখানা—

আমি তার একান্ত প্রহরী—


যেন বৃদ্ধ বটগাছ, মাথার ভিতর 

নীল অসংখ্য জোনাকি  

এলোমেলো 

তীব্র গতিময় আর

আজও অমীমাংসিত


অশ্রু


ব্যাহত সংলাপ বাড়াবাড়ি করে মাথার ভিতর—


আমাকে উদ্দেশ্যহীন করে তুমি নিজে নিরুদ্দেশ।

এখনি ঢাকনা খোলা অ্যাকোরিয়াম থেকে 

মনে হয় চলকে উঠবে জল

ঠাণ্ডা মেঝের উপর ছটফট করতে থাকবে গোল্ডফিস 

... পাহাড়ি নদীর মত তুমি হয়তো এতক্ষণে

পাহাড়তলিতে নেমে গেছ, লামডিং গ্রামে...

সাকোর উপর থেকে আমি ছুড়ে দিচ্ছি ফুল

রঙিন মাছের মত ওরা দূরে চলে যায়


কীভাবে ফেরাবো আমি, এই বয়ে যাওয়া জল?


শিমুলপুর


উঠোনে মাদুর পাতা

বুধবার গঞ্জে হাটের দিন—

বিবিধভারতী 

হ্যারিকেনের আলোয় কাঁপে চণ্ডাশোক

কণিষ্কের মাথা ভূগোলের ধূলায়

বেলফুল, জুঁইফুল, ভাইবোন—

বইয়ের উপর ঘুমে ঢলে পড়ে

ওদিকে নতুন আলুর গন্ধে 

মিশে যাচ্ছে দু’একটা মরলা মাছ।

সামান্য চাঁদের আলো 

আর এক ঝাঁক তারা মাথায় করে

একটু পরেই বাড়ি ফিরবে বাবা...


—এর অতিরিক্ত যদি কিছু লিখি,

তোমাকে বুঝিনি আমি।

মন্তব্যসমূহ

নামহীন বলেছেন…
তিনটি কবিতাই মন ছুঁয়ে যায়। শেষ লাইনে বিস্ময় দুটি কবিতায়।
কৌশিক সেন বলেছেন…
অসাধারণ তিনটি কবিতা
Prativa sarker বলেছেন…
অন্য গোত্রের কবিতা। আপাতসরল,কিন্তু গভীর ব্যঞ্জনাময়। ঘাসফুল এবং তঞ্চকতা দুইকে এভাবে মেলানো অল্পজনের পক্ষেই সম্ভব।
নন্দিনী সঞ্চারী বলেছেন…
সহজ স্বচ্ছন্দ ভাষা। কী অপরূপ!
রশীদ হারুণ বলেছেন…
অসাধারণ লাগলো।
শুভদীপ আইচ বলেছেন…
অপূর্ব তিনটি । ব্যবহার *
Unknown বলেছেন…
খুব খুব ভালো লাগলো।
"অশ্রু" র শেষ লাইন❤️।

জনপ্রিয় লেখা