কবিতাগুচ্ছ | আশীষ সাঁফুই | আঙ্গিক, মে, ২০১৯


সার্কেল ?


হেঁকে হেঁকে পুরানো পাপ ফিরে গেলে বেরোই রাত্রি কালীন রাস্তায়
অঘটন ঘটাও যে একটা ঘটনা এটা জেনেও অপেক্ষা করি বদলে যাওয়া সময়ের। স্যালাড, মাংস,বিরিয়ানি ভাত ঘোরে বন্ধুদের থালা জুড়ে - আর ঘোরে আগুন-মানুষ-বাতাস- স্ফূলিঙ্গ


স্টেশন । চলন্ত যাত্রী হীন ট্রেন কারশেড গামী।
ব্যাকস্পেস মেরে মুছে দিচ্ছি গভীর 'ব্যস্ত জীবন' -
ছবির মতো পুরানো হয়ে যাবে দৃষ্টি


কোথাও কিচ্ছুটি থাকবে না একা হয়ে যাওয়া ছাড়া!


মা মরা ছেলেটির নামে একটা সোঁতার নাম রেখেছি
অজগর খিদে আছে যার
মাতৃপুরুষের তর্পণের পর খিদে ক্রমশ বাড়ছে
                      ভালবাসার ....



চিহ্ন হীন থাকাই নীতি
চিহ্নিত হওয়া রাজনীতি। আর আলো ও অন্ধকারের মাঝে দাগ বক্র । ছায়াবৃত্ত।
গোধূলি কিংবা ঊষা সরে সরে যায় ...


মাতাল চিহ্ন । কাগজের আস্তিন বাঘের মতো
এই ঠান্ডা পরিপাক হীন রুটি পাথরের মতো শোকাকূলা!
সংসার বেঁধেছে হাতে হাত রেখে। মানুষ চলে যায়। মানুষের চলে যাওয়া আছে, সংসারের আছে ভেঙে খানখান



শ্রাবণের মাস


কারণ আর ভাবা যাচ্ছে না ভাবা যাচ্ছে না আর না ভাবাই ভাল এ বহুমুখী স্রোত
দরজার যেমন তালা থাকে আর তালার দরজা অথচ কেউ কাউকে অতিক্রমের ভয় নেই তেমনই সমান্তরাল সম্পর্ক আমাদের এ ঘর বাড়ি ঘুম প্রাচীন অভ্যেস
কথা বলা দুরন্ত কীবোর্ড মেসেজের শেষে একা স্রেফ একলাটি রাত নতমস্তকে সরে যায়

দূরত্ব অনতিক্রম্য দূরত্ব। অনিয়ম সব ঝড় লন্ডভন্ড
শোকের ওজন বুঝি মানুষের থেকে বেশি !


তবু বলি ফিরো যতটা যতটা সাবধানে ফেরা যায় জীবনের দিকে
আমাদের ডানা ভাঙা বিষাদ দ্যাখো দেখা যাবে অস্বচ্ছ স্ফটিকে !




মৃতের ঘর-বাড়ি থেকে 


পিচ রাস্তা দুপুর ঘোষেদের পাকা বাড়ি
শবাধার হরপ্পার ধু ধু মেঝে একতলা দুতলা ঘর
উঠোন বেলপাতা খসখস বুকে হেঁটে উত্তরে হাওয়া


গত চৈত্রে বাবা মা তারও আগে
উঠোন যাতায়াতহীন লেবু বেল শুকনো পাতা
বাস্তু ত্যাগী ঘোষপুত্র মস্তক মুন্ডন ধুতি ধূপ

বাৎসরিক শ্রাদ্ধ মন্ত্র, পিতৃপুরুষ করে আসা যাওয়া




সার্কাস 


ফিঙের ডানায় রাত নামছে
চড়ুইভাতির শেষ দানা মুখে দিয়ে মায়াবী কর্মী হয়তো সারারাত জেগে যাবে স্বভাবপোড়া মানুষের পাশে

ডানে রাখা গুন্ডামির প্রখর হাত বামে রং পতাকার সুতো সুতি টেরিলিন লাইলন

জাঁহাবাজ যোদ্ধা সিনেমার দর্শক খেলনা বেলুন বিরিয়ানি দম সার্কাস দম রাখলেই সার্কাস ঘুরবে

জমানো কষ্ট এত সহজেই ছাড়া যাবে না সকলে জানি
কষ্ট না থাকলে বুক ফেটে যাবে ভেবে ভেবে রাত জাগা তারা তারা বলে লেহন শরীর শরীর শরীরের রোমকূপ

পচানো হাসির পাশে শুয়ে থাকে না-ঘুম এলেবেলে নাগরের মতো



গলা নর্দমা, অচ্ছুৎ মানুষ, মৃতদেহ বহনের গাড়ি
দেখি আমার দেশটা ক্রমশ ক্রমশ পর হয়ে যাচ্ছে আর
জিঞ্জিরের ঝনাৎ শব্দে আমি ভাবি ভোর ফুটে গেল
আশ্চর্য পরিস্কার এ উঠোনে!

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা