কবিতাগুচ্ছ | পঙ্কজ চক্রবর্তী | আঙ্গিক, মে, ২০১৯


অচলায়তন

নিকটবর্তী পথের হাতছানি দুইদিক থেকে ডেকে নেয়
সংক্রামক হাওয়া উদাসীন
উদ্দেশ্যপ্রবণ এই গন্তব্যে কোনো সাড়া নেই

আমাকে পৌঁছে দিন শিকারের খুব কাছাকাছি
পরম্পরা মরে অর্থহীন শোকে
একলব্য মেলে দেয় ডানা

সেই থেকে বুড়ো আঙুলের সতর্কতা অভিশপ্ত ব্যাধের জীবনে



অবসাদ

ছাদের বিশ্রামঘর সাটার নামিয়ে দিই
তুমি এসেছিলে
দরজায় লুকোনো বসন্তের ডাক

এখন ভেঙে দেবে মিস্ত্রি এসে  -- অবসাদ নেই

গোপন প্রেমের উচ্ছ্বাস মনে আলো জ্বলছে না কোনো
যেন গল্পের চরিত্র   পুত্র জীবনানন্দের

সংসারের হিসেব মিলিয়ে সুখে বুক ভরে উঠছে না
ছোটখাটো গল্পগুজবে অভিশপ্ত কিছু হাসি

ছাদ থেকে দেখি অপচয়  -- পাড়ি দেয় ঈর্ষণীয়



আড়াল

ছোট পরিসর তোমাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরেছি
আমি জানি পরিস্থিতির চাপ
তোমার সঙ্ঘবদ্ধ ডানার উত্তাপ মোহময়

ঘন মেঘের আড়ালে এই প্রস্তুতি
সন্ধ্যাপ্রদীপ থেকে কিছু দূরে
জোয়ারভাঁটার জলে অনিশ্চিত এক পারাপার

নিজস্ব কথার অপরূপ বয়ানে আর কোনো অপরাধ নেই
সামান্য খাবারের প্রত্যাশা ছলনামুখর-- টের পাই

নদীর শুকনো খাতে সন্দেহ নেমেছে পর্যটনে



নির্বাচন

শান্ত মানুষের জেগে থাকা জরুরি এখন
সীমানার ঝোপঝাড় আরও নিবিড় ঘন হোক
দিকে দিকে ফাঁদ পাতা বুঝে নাও তুমি

ঘর মুছে বসে থেকো শান্ত দাওয়ায়
ছোট খাটো সমস্যা মোকাবিলা করো

তোমাকে ডাকবে কাছে মানুষের মতো এক স্বর
রক্তের উষ্ণ স্রোত হাত রাখো বুকে
কাঁটা ঝোপে মেলে রাখো গৃহস্থ পলাশ

পথের দুপাশে শান্ত পায়ের ছাপ ফেলে বাড়ি ফিরে এসো



নির্বাসন

নাগরিক কোলাহল বলে খুব হইচই হল
যেন কোনো কোলাহল আমাদের নয়
দূরত্বে দাঁড়িয়ে জল মাপি

ধূসরতা বললেই পাঠক ডেকে নেবে কাছে
ধূসরতা মেখে খাবে অর্বাচীন ভাতের থালায়
মানুষের অর্থহীন বিবেচনা
তুমি কেন ছাদ থেকে ছুঁড়ে দেবে বিষাদ কথার বাহার

শব্দ যদি ক্রমাগত উল্টোদিকে হাঁটে
নির্বাসনপ্রিয় মানুষের হাত ধরে চলে এসো

নাগরিক মানুষের আত্মগোপন এমন কিছু জটিলতা নয়


প্রকল্প

বালকের দুরাশার পাশে বসে আছি চুপ
নিছক গল্পগুজবে চলে আসি স্বপ্নের কাছাকাছি
সাড়া নেই কেবল শূন্য হাওয়ায় মাথা নড়ে

শিল্পের খাতিরে ডেকে এনে অকারণ কাছে বসাই
ব্যাথার গভীর ক্ষত আকাশে বাতাসে

আমার অপচয় দিয়ে ঢেকে দিতে চাই সব শিল্পবোধ

হে বালক খেতে এসো -- দুর্দিনের অন্ন ফেলে যেতে নেই

মন্তব্যসমূহ

শুভদীপ দাস বলেছেন…
খুব ভালো লাগলো কবিতাগুলো পড়ে।
আরও নতুন নতুন লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকবো।
কবি পঙ্কজ চক্রবর্তী কে আমার প্রনাম,তার দীর্ঘজীবন ও সুস্থতা কামনা করি।

জনপ্রিয় লেখা