কবিতাগুচ্ছ | জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি | আঙ্গিক, মে, ২০১৯



থ্রিলার

আমার ভালোলাগে না এসব, আমার পছন্দ
নয় কেউ আমার ভিতর বসে সাপ-লুডো খেলুক

কখনও সিঁড়ি বেয়ে উঠে, কখনও বা
সাপের মুখে নেমে। থ্রিলার সেটা নয়

থ্রিলার এটাই যে, ছক্কা পড়ছে না দেখেও
বারবার ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে

পুটের দান ফেলে যাচ্ছি


বনবাস

তুমুল বৃষ্টি হলে আমি বীজ বুনি। ঘাসেদের অনুগ্রহে মুছে ফেলি ভীড়। কমে আসে রং, রোদ, আলো। ছায়া, ছায়া থেকে নেমে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেল বনবাসে

কোনও প্রশ্ন করি না, নৌকা গড়ি। নৌকা মাঝি হয়। খরমজোড়া সাজিয়ে রাখি নৌকায়

খড়মে পা গলিয়ে নদীটি’ও চলে যায় বনবাসে



হেলে থাকা স্ট্রিটলাইট

একটি মেয়ে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে আছে

যদিও ফাঁকা প্রশস্ত ফুটপাথ, তবু
ফুটপাথ থেকে নেমে এসে দাঁড়াল সে

বাঁ পা’টা একটু আগে, না ডান পা ?
মনে নেই, ফিনফিনে কাপড়ে ঢাকা ছিল গা

শুধু দেখলাম একটা শরীর
ঝুঁকে আছে, রাস্তার উপর

রাস্তা থেকে উঠে এসে কেউ কিনে খাবে বলে



আমার ভিতর একটা দু’মহলা বাড়ি ছিল


যখন ছিল, বুঝিনি। তারপর চোখের পিছন থেকে একটার পর একটা খসে পড়ল ইঁট। চোখের সামনেই ধ্বসে পড়ল বাড়িটা

আমি তখন বাজারে। মাছ কিনছি। দরদাম করছি, রুই আজ কতো করে গো আর মৃগেল। কিছু সজনেডাঁটা ব্যা।গ থেকে উঁকি মারছে আর খাসা একফালি ইঁচর

এসব থেকে কিছুটা দূরে, একটা রাস্তা। যার দুটো মুখ। একমুখ ধরে আমি এসেছি আর একমুখ ধরে যাব

এই দুই মুখের মাঝে যে রাস্তা, তার উপরেই ছিল বাড়িটা। ভেঙে পড়তেই হৈচৈ। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলাম, একটা বাড়ি ভেঙে পড়ছে

কার না কার বাড়ি। নিশ্চিন্তে বাজার করলাম। সদর পেরিয়ে, উঠোন পেরিয়ে দরজায় হাত রাখতেই, চৌকাঠটা খুলে আমার হাতে

বুঝলাম, আমার আর কোনও বাড়ি নেই



অন্যরকম নিপুণতার...

ওসব রেখা ও তান, আমার কিছু পায় না। তবু তাকিয়ে। তাকানোতে আমার খুব পরম আসে‌। অ-দৃষ্ট। অ-পূর্ব। একসঙ্গে সবকিছুই, এমন নয়। হয়তো পাশ ফেরা এক নাকের নথ। আমাকে দোসর ভেবে ও স্থির হল

বিরাট কিছু নয়, পরদিন জানলা খুলেই বিক্রি হল রোদ। দরজা খুঁজে পাচ্ছি না, এইসব কোনকিছুকেই আমি আর অবাক ভাবি না

অন্যআরকম নিপুণতার অভাব শুধু উল্টে, সাহস পেয়ে, লজ্জা হয়ে, নথ ছাপিয়ে নাকের ডগায়, নাক ছোঁয়ালাম

মন্তব্যসমূহ

নামহীন বলেছেন…
আপনি গদ্য টাই ভাল করে লিখুন । এসব কবিতা আপনার হয় না
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
হা হা হা হা...তা ভালো।

থ‍্যাঙ্কু।

জনপ্রিয় লেখা