আদিদেব মুখোপাধ্যায়ের ডিসেম্বরে লেখা কবিতা | আঙ্গিক পত্রিকা





আমার ঘরটা জমজম করে
ভাবনায়

একটা ঘাই ওঠে
নড়েচড়ে বসে চেয়ার টেবিলগুলো

নীরব শব্দ হয়
ঘষ্টানির

জমাট স্মৃতির মধ্যে
দুলতে থাকে
একটা সূক্ষ্ম আলপিন




গেলাসটা
টেবিলের মধ্যে
টেবিলটা
মেঝের মধ্যে
ঢুকে আছে
অংশত

তাদের নিবিড় শলা
শুনব বলে
কান পাতছি আমি

শব্দ নেই
শব্দ নেই
শব্দ নেই

আমার মুখ হারিয়ে গেছে




অপরিসীম
বাঁক নিচ্ছে
বক্রিমা

সামনে দীর্ঘ পথ
দীর্ঘতম পথ

রেখাটা ফুরিয়ে যাচ্ছে
কী দ্রুত




চিন্তার প্রাসাদে
হারিয়ে গেছি

অলিন্দ দিয়ে হাঁটছি
হাঁটছি
সংকীর্ণ পথে

প্রাসাদটা বিশাল- ঠাহর হচ্ছে-
প্রান্তগুলো কি ছুঁয়ে আছে
অসীমের কিনারা

হাতড়ানোর হাত ঢুকিয়ে দিচ্ছি
নিজের মধ্যে




ভাঙা রেখা
আর
গুঞ্জনের টুকরো
জমতে জমতে
বাড়তে বাড়তে
কখন
স্বপ্ন শেষ




রাত্রির আকাশে
হাউই ফাটছে
তোমার চোখ
তোমার চোখের তারা
টুকরো টুকরো
রাত্রির আকাশে




একটা শাদা কাগজ
একটা লাল বৃত্ত

একটা সূর্য জেগে উঠল
একটা বেলুন
উড়তে শুরু করল
উল্লম্বভাবে




আমাদের মাথা ভরে যাচ্ছে
ঘুমে
ঘুমই আমাদের মাথার কিনারাগুলো
মুছে ফেলছে
একাকার করে দিচ্ছে

কার মাথা যে কার মাথায়
ঢুকে যাচ্ছে
হিসেব নেই

মাথাগুলোই আর নেই

কিন্তু
কার মাথায় চলছে
এই স্বপ্ন




হাওয়া কাটছে
হাওয়ার ওপর দিয়ে
হাওয়া
সাফ করে দিচ্ছে
হাওয়ার অন্তর

হাওয়াই হাওয়ার খোদাইকর
হাওয়াই আঁকছে
হাওয়াকে


১০

কাগজ ভর্তি ক’রে
আঁকছে একজন
প্রতিটি ইঞ্চি
ভরাট না করে
একটুখানি ফাঁক রাখল সে

আমাদের ওখানেই চোখ যাবে
সে জানে,
আসল আঁকাটা
ওখানেই 


আঙ্গিক | কলকাতা বইমেলা ২০১৯ 

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা