আদ্যন্ত নদী- অত্রি ভট্টাচার্য্য
মাংস মায়া আর আদ্যানদী
কবি- শতানীক রায়
প্রচ্ছদ- শ্রেয় সেনগুপ্ত
প্রচ্ছদ- শ্রেয় সেনগুপ্ত
প্রকাশক- তবুও প্রয়াস
দাম- ১২০ টাকা
দাম- ১২০ টাকা
১
আরোও বই ছিল। বইপড়ার স্নায়ুযোজ্যে ঘনঘন আর্তি, ফোনের, এবং
ফোন তখন-ই বেজে ওঠে যখন একটি লেখার অবনমন মাঝপথে; তার প্রভাব ততক্ষণে অতীত। প্রভাব
এই অন্তর্বস্তুটিও অতিনাটকীয়। যেন টিনের চালে অনমনীয় বৃষ্টি, শব্দরূপ রমণের উপর
ব্যাথা ব্যাথা ঝরে পড়ছে।
শতানীকের বই-এরও আগে বান্ধব আন্তর্জালে
ভেসে ওর ভার্জিন সব লেখা চুম্বনে উদ্যত, আমি তখন থেকেই অসহায়। তখনও জানিনি ও
লেখারা ইতিমধ্যেই গ্রন্থাকারে, অর্থাৎ এই ভ্রমবশের ভার্জিনিটি আসলে ছদ্ম, নাইভ এক
তথ্যাভাব। সুতরাং কবিতারা অন্তঃস্থ ও বশীভূত আকারেই বয়ঃসন্ধি মেলে টানটান করল। এই
অবস্থা আসলে অসহায় থেকে বেরিয়ে আসার। ওর ইতিমধ্যের লেখাও, যেমন, “...খুব পুরনো হলে
যেমন একটি মানুষ/ঘুমিয়ে পড়ে...সমস্ত শব্দ আমারই/ রসের অনটনে গোপন করে এই দেশ”
(ঐহিক ব্লগ) চেনা ব্ল্যাঙ্কেটের তলায় খুব সূঁক্ষ্ম কারুকাজের দুটি পোড়ামাটির পা,
তাদের আপাত শীতলতা তাদের অমরত্ব দেয়। এই তুলনাও শতানীকের লেখায় চিরস্থির না, সময়,
অথবা নিদেন মূহুর্তখন্ডের ওঠানামার সঙ্গে তাদের গা ঘেঁষাঘেষি। আমার চাহিদা ছিল
প্রকাশের আগে থেকে, অবশ্য-ই প্রকাশসংবাদের সামীপ্যে – “মাংস মায়া আর আদ্যানদী”, তবুও
প্রয়াস প্রকাশিত শতানীক রায়-এর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ।
বইটি হাতে আসার পর, এবং আগেও, প্রচ্ছদে
লাল জমিতে আঁকা টুকরো টুকরো সাদা ও কালোর টেক্সচার এক ঘন বিষাদ আমার নদীময়। আমার
পূর্বনির্দিষ্ট, সততঃ ভুল, ধারণানুযায়ী কাব্যগ্রন্থের প্রচ্ছদ বহন করবে
বা করা উচিৎ অন্তর্লিখিত কবিতাগুলির একটি ব্লারি লংশটের মতন, যা সামান্য
বিক্রিয়াসহ প্রতিটি পাঠের পরে বদলে বদলে যাবে পাঠকের মনমধ্যে। সে নিরিখে শতানীকের
বইটির প্রচ্ছদ, সামান্য পরিশ্রমেই ভার্সেটাইল। যদিও বলাবাহুল্য যে, এ প্রচ্ছদ
অবলীলায় বুকে টেনে নিতে পারত এ ছাড়াও আরো বৃহৎ পরিসরের অন্তর্গত যে কোন শিরোনাম।
এক্ষেত্রে ভার্সেটিলিটি ও চাতুর্য্যের সীমাপর্দা, তদুপরী প্রকাশের অক্ষমতা, জায়গায়
জায়গায় খসে যায়।
ওর আগের দু’টি বই-এর, অন্ততঃ শিরোনামগত
উত্তরাধিকার, এখানে বহন করবে উৎসর্গপত্রটি।“নৈঃশব্দ্যের বন্দনা” এবং “না-আমি”
এখানে পা রেখেছে “মৃত্যু--তোমাকে” পাতায় এবং মর্বিডিটির বদলে এ নেহাৎ অর্বাচীনের
ব্লান্ট স্পর্ধা কিনা তা ক্রমঃপ্রকাশ্য। যদিও সূচিপত্রের আগে একটি হঠাৎ-স্থিতি
রেখেছে শতানীক, ভূমিকার অভাবে যে পাতাটিকে কৈফিয়ৎ বলা হয়ে থাকে, এক্ষেত্রে তাকে
নিজেকে খুলে একটি সিগারেট জ্বালিয়ে বসবার সঙ্গে গেলাসের ঠুং-বৎ ধরে নিতে পারি। বড়
উৎসাহের রিভিলেশন নয় কিন্তু বহতা কবিতার যে মুহূর্তটি তার আপন স্বচ্ছ্বতাকে নগ্নতা
ভেবে ব্যাঙ্গ করতে শুরু করে, সে চৌকাঠের পরোয়া করেনি শতানীক। তাই “...এই মূহুর্তে
অখন্ড বিশ্ব-ব্রহ্মান্ডের তলায়/ দাঁড়িয়ে দান করতে চাইছি” (আমি এটুকুই পড়ব) যদি
“কথা হবে পাঁজরে পাঁজরে” অন্তঃসলীলা উদ্বেগকে ভাসিয়ে তোলার চেষ্টা করতে চেয়ে থাকে
তবে বলব এ তথাকথিত কৈফিয়ৎ ভার্চুয়াল গন্তব্যের গন্ডদেশ ছুঁয়ে যাওয়া ধুমকেতু এক।
পুরো বইটি একাধিক (পড়ুন আধডজন) খণ্ডাংশ প্রণিত এবং তাদের নামবিকার কোন অভিনীত নাটক পড়বার মতন, প্রতিটি অঙ্ক ও দৃশ্য আপন
আপন উৎসের কাছে আজন্ম ফিরে যায়। বা নামগুলি, “কী ব ল ব”, “কী বলব” (প্রথম ত্রিশটি
কবিতার দীর্ঘতম দ্বন্দ্বাভাস দ্বিতীয় খন্ডে এসে একটু চড়ুই হয়েছে কি?), “পূজার
বিধি”, “মায়ানদী” (শিরোনামের সবচেয়ে নিকটতম কালখণ্ড যদি শিরোনাম প্রকৃতিতে
প্রচ্ছদের মতোই কল্পনাপ্রসূ হয়। হত।) কিঞ্চিৎ বিরোধাভাসে “শূ ন্য তা য় ছে য়ে ছে শ
ব” (অক্ষরের এই অসলগ্নতা যেন সন্দেহের একান্ত ও একমাত্র স্থিতধী বন্ধু হয়) এবং “শো
ক” – এক অন্তর্মুখীন, স্বভাবপীড়িত কবির প্রাচীনতম জলখেলার চিহ্ন সব। যদিও আমরা
কবিতার কাছে এলে কালের কাছে হেরে যায় শোক, বিষাদের মাথায় ঊষ্ণীষ ওঠে কালানৌচিত্যের
চূড়ান্তটি দোসর ক’রে এবং সংরাগ সংশোধনের থেকেও বেশী বন্ধু হয়ে ওঠে পাঠকের। হে
পাঠক, আমরা সেইরকম যৌথাচারে বিশ্বাস রাখি।
২
প্রথিতযশা কবিরা যখন কবিতা লিখবার মানেবই রচনার্থে
কলম ধরেন, সততঃ কবিতা, আপন রূপরসটেনট্যাকলসহ তাদের থেকে দূরে সরে যায়। এক্ষেত্রে
সারসকে কল্পনা করুন বকধার্মিক, অন্ততঃ সাময়িক, আর তার কলমকে অস্ত্র মনে ক’রে
আত্মরক্ষার্থে ডানা গুটিয়ে নিচ্ছে পার্সোনালাইজড কবিতা। গত দশকে লিখতে আসা
যশোপ্রার্থীদের ক্ষেত্রেও, এসব লাইটহাউস চড়া আলোয় ডানার লোম পুড়িয়ে দেয়। কবিতার
থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠে কবিতার ছাল বাকল নিহিতের-থেকে-অধিক-প্রকট পর্দাগুলি।
“প্রথাগত” শব্দটি তাই বিষয়ের থেকে আঙ্গিককে বিদ্ধ করে বেশী। এলিয়ট বলেছেন সেই
প্রথম যুদ্ধোত্তর “Tradition and the Individual Talent (১৯১৯)” প্রবন্ধে,
“Yet if the
only form of tradition, of handing down, consisted in
following the ways of the immediate generation before us in a blind or timid
adherence to its successes, "tradition" should positively be
discouraged.”
এ প্রসঙ্গ এল কেন? এল, কারণ যে কোন
কাব্যগ্রন্থ পড়তে বসবার আগে আমার মাথা দুভাগ হয়ে যায়। একভাগ তার সুলালিত
স্বভাববশতঃ আঙ্গিকের সাইন্যাপ্সগুলি খোঁজে প্রতিমূহুর্তে বিদ্যুৎপ্রবাহ ঝলসে ওঠবার
আশায়। আর অবশিষ্ট জেগে বসে থাকে যেমন সে জেগে উঠেছিল সুদূর শুন্যের প্রায় শুরু
থেকে, নব্বই কবিদের তরবারী ঘনঘন ঝলকাচ্ছে তখন; এমনকি আলোক সরকার বা পার্থপ্রতিম
কাঞ্জিলাল-ও টেনে এনে ফেলছেন কর্দমাক্ত পথে চটিজুতোর হিরোইজম অঙ্গুলীনির্দিষ্ট
করে। অর্থাৎ কবিতা পড়বার শুরু থেকে লেখায় আঙ্গিকের এফোঁড়-ওফোঁড় প্রবণতা যাদের বিটপ
করেনি আমি সেই বিরল প্রজন্মমালার একজন। আঙ্গিকের ভার্চুয়ালি নিঃসীম এই সমুদ্রে
ডুবস্পৃহা তথা বেসিকালি তল না পাওয়ার গুহ্যদোষ হয়তো এই কারণেই আরোও প্রবল আমাদের।
শতানীকের কবিতা নিয়ে লিখতে গিয়ে আমার
সমীপে উপবিষ্টা উৎকন্ঠ শর্বরীটি যখন মতামতের ঊর্ধ্বে গিয়ে নিঃসন্দেহে জানালেন,
আঙ্গিকের খাতায় শূন্য দিয়ে নকুলগড়াগড়ি দেবার চাইতে ওর ছোট ছোট শূন্যতা ব্যবহার করে
শান্ত প্রকাশক্ষম বুদ্ধিমত্তার কন্ট্রোলড প্রশংসা বরং চ্যালেঞ্জিং হবে বেশী, আমার
চোখে ভেসে উঠল নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর “কবিতার দিকে ও অন্যান্য রচনা”-র
প্রবন্ধগুলি। সোচ্চার নন, উৎপল দত্তের প্রবন্ধভাষায় যে শাণিত মতপ্রকাশ জ্বলজ্বল
করে তার সম্পুর্ন বীপরিতে দাঁড়িয়ে তার বেশীরভাগ ঋজু মতামত স্বগতোক্তির ভঙ্গীতে,
একা-পাঠকের প্রতি। শতানীকের যে কোন একটি কবিতা, যেমন,
“মাটিতে যেমন ওই পড়ছে
প্রাচীন নরমুণ্ডু জল
প্রাচীন নরমুণ্ডু জল
পাখির মত মৃগধ্বনী
বেড়ে যায়
বাড়তে থাকে ষড়-ধ্বনীর মতো”
বেড়ে যায়
বাড়তে থাকে ষড়-ধ্বনীর মতো”
অথবা ‘কী বলব ৭’-এরই আর দু’টি পংক্তি,
“নরমাংস তুলোতে বদলে যায়।
তুলো ঝেড়ে ওঠো গাছ--”
যখন নেহাৎ
ট্র্যাডিশনাল পথেই ঝলসে ওঠে আগুনে ব্যবহারে, প্রায় অ্যান্টাগনিস্টের ভঙ্গীতে প্রথম
পংক্তি (স্বতন্ত্র হতে বলেছ তুমি।)-র কন্টিন্যুইটিকে অস্বীকার ক’রে প্রায় বাঁজা
বানিয়ে দেয়, এ সহজবোধ্য যে এ লেখা স্বতন্ত্র হতেই এসেছে, যতোই সহজ বা বোধ্য হোক
সে।
কী বলব ও কী ব ল ব-র উভয়শরীর-ই আঁকা
সামগ্রিক মানুষ ও তার অস্তিত্বের প্রতি অন্তর্লীন বিতৃষ্ণার রঙে অপরঙে। সময়ের
স্বাভাবিকানুসারে শতানীকের এই অংশের কবিতাগুলিও “কী বলব”-র কনফিউশনে আগ্রহী কিন্তু
বেরিয়ে আসায় না। সুতরাং কিছু বালখিল্য তৈরী হয় বৈকি; ৩, ৫, ১১ নং লেখার নগ্ন
ভঙ্গুর অর্বাচীনতা, ১০, ১৩, ১৪-য় লেখার পথ হারিয়ে লেখাবীহিনতার প্রাচীরে মাথা ঠোকা
অথবা ১৬ নং দীর্ঘটির নামে কেবল ডায়রীর পাতার মধ্যে ঘুরপাক খাওয়া উপলগ্ধিহীন
চিন্তার চিহ্নমাত্রবীহিন গীতাকথামৃত-র দু’-এক স্ট্যাঞ্জা চলকে যাওয়া আলোচ্য দশকদের
এক অবধারিত দোষ তুলে ধরে। আমি তার নাম দিয়েছি অপরিমিতি, নির্মাণের প্রতি যত্নের
অভাব থেকে শুরু করে নির্বাচনের কালে পাঠককে গড়পড়তা ভেবে নেওয়ার প্রতিটি
স্নায়ুক্ষেপ এ শব্দ কভার করে।
যাই হোক, কিছু ভূমিফুল ফুটেছে বৈকি এ
আশব্দগ্রন্থাধারে, যাদের, নিয়ামক শব্দব্রহ্মের দোহাই, কবির মগডাল থেকে পেড়ে নিতে
পারে এমন আকুশি পাঠকের সহজায়ত্ব। যেমন, ২৫ নং পাতার ১৩ সংখ্যাঙ্কিত গাছটি। পুরো
লেখাটি “অরণ্য সংস্কার” শব্দবন্ধের সার্থক উপগ্রহ হয়ে আহ্নিক পেয়েছে এবং বড় আশায়
বলি, আমার চোখ-ও খুঁজে পেয়েছে বাংলা কবিতায় শক্তি-ঘরানার একইরকম কেন্দ্রাতিক,
বিষয়বশ কিন্তু কবির নিজস্বতায় লাজশীল একটি ডিকশন। পংক্তি উল্লেখ না করেই বলি, কিছু
কবিতা তাদের উৎসের বলের সামনে নতজানু হয়, আগাগোড়া দুর্বল, ব্যার্থ শব্দপ্রয়োগের
বাধা সরিয়েও পাঠককে বসাতে পারে এক পানাসরে। এ লেখা সেরকম কিছু। অথবা পূজার বিধি –
২নং কবিতাটি, স্মার্ট, অমেদজ জিনের সন্তান একটি --
“মশারির ভেতরে আস্ত একজন চার্বাক
আত্মাকে অস্বীকার করছেন
পুনর্জন্ম নেই বলে ‘হাঁ হাঁ’ করছেন
আত্মাকে অস্বীকার করছেন
পুনর্জন্ম নেই বলে ‘হাঁ হাঁ’ করছেন
আমি কিছুতেই তাকে থামাতে পারছি না
শেষে বললাম, ‘দাদা আপনি নেমে আসুন,
বাইরের পদ্মকে ছুঁয়ে দেখুন.
ওই যে পাশ দিয়ে ভেসে যাচ্ছে
হংসধ্বনী...”
শেষে বললাম, ‘দাদা আপনি নেমে আসুন,
বাইরের পদ্মকে ছুঁয়ে দেখুন.
ওই যে পাশ দিয়ে ভেসে যাচ্ছে
হংসধ্বনী...”
নিঃসন্দেহে
ধ্বনীময় অ্যান্টিপলিটিকালনেসের সংযত উদাহরন হতে পারে একখানি। যদিও এতদূর এসে পাঠক
অল্পায়াসে বুঝে নেবেন কবির অস্বাস্থ্যকর ভাববাদী খাঁচাটি, ছত্রে ছত্রে
গীতা-বেদ-আত্মা-কুন্ডলিনী-পরমহংসের বেয়াড়া উল্লেখ ও উদাসীন মরমিয়াবাদের আচ্ছন্ন
উপস্থিতি। আহুতির এক চরম বস্তুবাদী আউটকাম হল এই যে আচ্ছন্নতায় ধনীগরিবে
বুদ্ধিমানমুর্খে কোন তফাৎ থাকে না। সেজন্য “বিশ্বাসে মিলায় বস্তু” কথাটির “মিলায়
বস্তু” অংশটিকে আমার চিরকাল বস্তুর মিল পাওয়া নয়, মিলিয়ে অর্থাৎ অদৃশ্য হওয়া মনে
হয়েছে। শতানীকের লেখায় দাঁতে দাঁত চেপে বিষয়ের উপর ফোকাস করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে
এই বস্তুর বেমালুম গায়েব হয়ে মিলিয়ে দেওয়ার অচেতন আয়াস, অন্ততঃ রাজনীতিসচেতন
পাঠকের চোখে পড়ে। চোখে পড়ে কিছু আপাত সংকট “বিষয়”ক্রমে এসে পড়লেও তাকে সযত্নে পাশ
কাটিয়ে যাওয়া ভাববাদী কেতা। যেমন, ৪৬নং পাতায় মাকড়সা শব্দটি সুস্পষ্ট পলিটিকাল জাল
খুলতে পারত অথবা ২৯ নং পৃষ্ঠায় “ভাসতে ভাসতে অসংখ্য/জাতিসত্তায় জেগে ওঠে” পংক্তি
দু’টি নিদেন সমকালীন সর্বশক্তিমান সারকাজমকে আশ্রয় করেও ভেসে উঠতে পারত কবিতার
শীর্ষে। ওঠেনি। ফলতঃ এই দীর্ঘ ১৬ নং কবিতার আপাত-অন্তিম পংক্তি হিসেবে স্পষ্ট হয়ে
উঠেছে “সুষুপ্তি বেছে নিলাম” লাইনটি। সারকাজম নয়, সেকি? ইন ফ্যাক্ট, ৩০ নং পাতায় এ
লেখার অবশিষ্ট যেটুকু শুয়ে আছে তাকে পাতার সংখ্যা বাড়ানো ছাড়া বই-এর কোন কাজে
আসেনি মনে হল, কবিতাটির নিজের জন্য তো বটেই।
লাস্ট বাট নট দ্য লিস্ট, বই-এর “শোক” খণ্ডকেই বলা যায় একমাত্র প্রতিশ্রুতিবহ অংশ, যার প্রতিটি লেখাই, কবির যাবতীয় স্বাভাবিক
দৌর্বল্য অতিক্রম করেও, সম্ভাবনাময়। তাকিয়ে থাকলাম এ অংশ পূর্ণাঙ্গ বই হবার আশায়,
কারণ কে না জানে যে কোন শিল্পীর শোক-ই সবচেয়ে ইনফিনাইট ও ভার্সেটাইল ক্যানভাস।
- অত্রি ভট্টাচার্য
আঙ্গিক, বইমেলা সংখ্যা, ২০১৯
মন্তব্যসমূহ