সাঈদ শ’র পাঁচটি কবিতা



নান্দনিকতা

কত জল! কত কাদামাটি রসে গাছ বড় হয়ে ওঠে দেখতে সুন্দর লাগে যদি সে গাছে ফুল-ফল ফোটে



এলিজি

রাতের বুকে রাত হয়ে শুয়ে আছি
শোকের বাগানে ফুটছে মৃত ফুল
নদীর যে বহতা, তাতে ভাসান দিই
জংলার মতোন ভেসে যাই- আমূল
মানুষের নিকটে যাই; যেন একটা গাছ
শরীরে বাকল - প্রবেশে বাধা পাই কভু
ঝম্পের মতো ছিটকে বেরিয়ে আসি
নিজেকেও বড় বন্দিশালা লাগে, প্রভু
জ্যোৎস্নায় অন্ধকার, চাঁদের ভেতর রাত
গানের মুদ্রায় সুর বেজে ওঠে- বিষাদ
মুমূর্ষের মতো শুয়ে থাকি ব্যাধির পাশে
আমার ঘরময় ছড়ানো অসুখের প্রপাত
মৃত্যুর অভিসারে নেমে বেলা-অবেলা
ঝরাপাতাস্বর আমাকে বাজায় দারুণ কৌশলে
পৃথিবীর কোথাও আকাশ ভাঙছে আজ
আমার হৃদয়রহিত বিষ বেদনার ঢলে



মিথ-১

সিগারেট বাক্সে লেখাঃ- 'ধুমপান মৃত্যু ঘটায়'।

এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিই সবকটি

দেখি- ধূমায়িত চোখে চেয়ে

জীবন দাঁড়িয়ে আছে মৃত্যুর উপর ভর করে।



মুখবন্ধ

দুই-একটা উকুন চুলের ফাঁকে-ফাঁকে
চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে খুঁজে পাওয়া গেল না, রাত্রিদিন।
এমন অসংখ্য উকুন মাথায়, মগজের ভেতর নিয়ে
কেউ কেউ ভরসন্ধেবেলা ঘুমাবার ভান করে শুয়ে থাকে।

যে যার সংকট বুঝতে পেরে রাস্তা সরিয়ে নিয়েছে
যে যার মতো করে,
যে যার নিজের ভেতর হয়ে আছে অন্তর্হিত।

যা কিছু হল না ঠিকঠাক,
যা কিছু থেমে গেল হঠাৎ
সেইসব ব্যর্থতা পৃথিবীর ঘাড়ে চাপিয়ে
সবাই মেতে থাকলো প্রেমে, অপ্রেমে, সঙ্গমে..

আমি শুধু কবিতা লিখব বলে ঘর ছাড়লাম,
আর কেউ কেউ বাড়ি ফিরে গেল চুপচাপ।



হরিশংকর জলদাস

সমুদ্রের ভাষা
জানে না নাবিক
জানে পশ্চিম জেলেপাড়ার
হরিশংকর জলদাস

দূরান্ত থেকে দেখা যায়
নীল সমুদ্রবিস্তার
অথচ জেনেছি জলের কোনো রং নেই

এমন সব ভ্রান্তির ভাষা নেই
ভাব আছে
ভাবের গভীরতা শুনেছি সমুদ্র অতল

আর তাই কতটা তিয়াস পেলে
সমুদ্র গিলে খায় মানুষ!
নাবিক জানেনা,
জানে পশ্চিম জেলেপাড়ার হরিশংকর জলদাস।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা