সঙ্ঘমিত্রা হালদার


যতটা আখ্যান, যতটা নয়

বাজারে যাব না যাব-না এ দোটানার ভিতর বার তিনেক
চা শেষ করি। একটা আখ্যান মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে
বৃক্ষের দীর্ঘ কাটানো জীবন। ও আলোয় চোখ জ্বেলে সহসা
আবিষ্কার করি, তার ভাবনায় কেউ আটকে আছে। উঠে গিয়ে
জল দিতে হবে। ভাবি হয়ত এই না-লেখাতেই বারোটা-একটা
বেজে যাবে।

কাব্যে উপেক্ষিত তর্জনী ধরে ধরে বহুদূরে একটা সানাই
রোগা হেঁটে বেড়াবে। যারা বিবাহিত, যারা নয়—সবার জন্য
একটাই রাগ বাজবে অনেকক্ষণ ধরে।



যে আছ ভুবনে

তোমাকে বলতে পারিনা এসো
কেমনের দিনে দু’টো বলো মন খুলে
এলেও যে কিছু ক্ষতি হবে তাও নয়
কেবল প্রতিটি যতির কাছে ঘুরে বেড়ায় শ্বাস তার
মর্মে সে সখার অধীন, তার ডালে নিঃস্ব বড় ফল

যে আছ ভুবনে তার, সুখী হও। হও
‘ধীরে বয় বটের ছায়াটি’



দরজা রেখেছ

সেইথেকে মাথার ভেতর হাত ঢুকিয়ে কে
দৃশ্য উপড়ে আনছে
বদলে রেখে দিচ্ছে রোদের সুরকি
ত্বক ফাটিয়ে ধসে যাওয়া রোমাঞ্চ হচ্ছি আমি
হচ্ছি হে প্রলাপ

তুমিও কথা রেখেছ কতকাল ধরে
দরজা রেখেছ ভেতরে আসতে বলনি



এই বাক্য নিয়ে

রাতের মিশকালো অন্ধকার কোনওদিন শেয়ারবাজারে উঠবে না জেনে
অধিকার আমাদের পরিত্যক্ত কামরায় ফেলে যাচ্ছে
পা দিয়ে আঁচড় কেটে কেটে ঘুলিয়ে তুলছে পৃথিবী

ট্রেনের জানলায় ছুটে যাওয়া দৃশ্যও একপ্রকার হুজুগের ন্যায় কমে
এই কি তবে সকল মেহফিল, ধন্য হবে একা
প্রান্তরে যখন একটা বকও আর উদাসীন নয়

মনোবেদনা তার কত-কী সন্ধি ও সমাস নিয়ে
নুয়ে আসছে চা শ্রমিকের পিঠে,
আত্মহত্যা নিজেকে প্ররোচনা দিচ্ছে—মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি নয়

এই অক্ষর ঘোলাটে, শব্দ ততোধিক
এই বাক্য নিয়ে আমি কোথায় দাঁড়াব



একা এক উহ্য মুদ্রা

যেন গতজন্মের হতশ্রী গ্রাম
তার দিকে তাকিয়ে স্বপ্ন এসেছে কাল
যেন পরব শুরুর রোদ্দুর এসে পড়েছে সারা গায়ে

কী এত ভালো লাগল, কার দিকে তাকিয়ে আলো এত
মনে করতে পারছি না দেখে
গৃহস্থের হলুদ পাকা সুপুরি চোখ তুলল জানলা দিয়ে

কার আলো, কোন্‌ পাতায় এমন হেলায় বাঁধে সকাল
ভাবতে ভাবতে আমি এক জেগে ওঠার মুদ্রা হলাম
তাকে দেখতে গিয়ে ভুবন হ’ল ঝিঁঝি

গল্পে তখনও কাক আসেনি

কেউ বিশ্বাস করল না—এমন একটা স্বপ্নে কেউ জেগে উঠতে পারে!

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা