শতানীক রায়



আঙ্গিক ব্লগ, জুন ২০১৮

মায়ানদী


ধর্ম থেকে নিষ্কৃতি চাইছি
ভাবছি গাছ হয়ে যাব
খাবি খেতে খেতে গাছের শরীরে 
আরেকটি গাছ হবো
মাছও হতে পারি
সূর্যও হতে পারি

এতগুলো হওয়ার পর যা ঘটে তা সত্যিই হাস্যকর
পাখির মতো হয়ে গিয়ে উড়তে থাকি 
উড়তে গিয়ে
মায়ের নাভির মধ্যে পড়ি
এত গভীর গর্তের ভেতর এত স্নেহ আছে
এত দেহ আছে
মাতৃগন্ধ পেরোতে পেরোতে অনেকটা পাখির মতো হয়ে যাই 
পাখিদের ডানার মতো মৃদু নরম তন্তু আমাকে গ্রাস করে


অবশেষে মায়ানদীতে তোমরা এলে
বসো, শান্ত হও
দুধ গঙ্গাজলে স্নান সেরে মানুষ হয়ে ওঠো।
সে মানুষ কথা বলতে জানবে
হাঁটতে জানবে নাচতেও জানবে...!
এরপর চোখ বুজে ধ্যানে বসি।
ধ্যানের দিকে আমরা কতটুকু যেতে পারি!!
আর ভাবি তোমরা মানুষ হলে না
আমি কতবার ভাবলাম মানুষ সৃষ্টির বীজলগ্নে সাক্ষী হব লিখে রাখব মহাপুরাণ---
এতটুকুও ভালো লাগে না।
এর চেয়ে নির্জ্ঞান ভালো
মাথায় দু ফোঁটা শান্তিজল নিয়ে নিজেই মানুষ গড়তে গড়তে মাটি লেপতে লেপতে
বিচিত্র জল হয়ে যাবো। 


ধাত্রী হও তুমি, ধারণ করো
এরপর আমাদের মৃত্যুপর্ব মিটে গেলে সমস্ত শস্য গলে যাবে
মেঘগুলো মিশে যাবে
মেঘেদের যেমন কোন ঘ্রাণ নেই
ঠিক তেমনই আমাদেরও কিছু থাকবে না
কাপড়গুলো থাকবে না
থান থান অরণ্যশয়ন থাকবে না
কিছুই না.....

এত বড় শূন্যস্থান এত বড় শ্মশান
তোমাকে ধারণ করতে হবে
ঘাটে ঘাটে নাভি পুঁতে দিতে হবে।


কেন যে একটি কুন্ডলিনী বারবার আসে!!!
উত্তর দাও শূন্যতা?
প্রশ্নাতীত কেন আছ?
এমন ভাবে ভেসে থেকে আমার কী লাভ!
পদ্মাসন এত মোহময় হয়ে থাকে শরীরে-শরীরে
ভেতরে ভেতরে এত সিংহের মতো
দানবের মতো হয়ে ওঠা
আর ভালো লাগে না
এখন শুধু নাক-মুখ-কান ঢেকে
অর্ধেক চাঁদের মতো হয়ে থাকি...


জীবন্ত আছ তো?
মরা মানুষের দেশে আর কত বড় হবে তুমি!
কত কত দীর্ঘ গাছও নদীর দিকে চলে যায়
অর্ঘ্য দিতে গিয়ে তুমি কেমন গঙ্গাজলের মতো হয়ে যেতে থাকো
প্রক্রিয়াকালে মানুষের মায়ানদী তাহলে
হাঁসের মতো হয়
আদ্যাশক্তি তুমি, তুমিই এবার প্রত্যেক রক্তে
জল ঢেলে দাও
আমাদের সেই গাছ
অরণ্য হয়ে উঠুক
উপরের দিকে দৃঢ়।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা