কৌশিক বাজারী
নববর্ষ ১৪২৫- ১৩
মুখ
কী আছে ওই মুখের ছাঁদে!
যেমন করে বিসমিল্লার করুণ বাঁশি কাঁদে--
অনেকদিনের পুরনো এক রোদ
পড়ছে এসে ছাতিম গাছে,
চোখের পাতায়
ব্যাকুল আলোর পা পড়েছে ফাঁদে
ভবিষ্যতের ভীষণ দেনা শোধ
করবে বলে অমন মুখের ছবি
তুলে রাখছে ভুবনডাঙার রোদ...
কিছুই তুমি ভাবছিলেনা
তোমাকে কেউ ভাবছিলোনা
আড়চোখে মুখ দেখছিলো সেই
বিকেলবেলার রোদ
অলোকরঞ্জন
একটা চৌকো ঘরের ভেতর বসে ছিলাম আমরা দুজন। বিপরীতমুখি দেয়ালে পিঠ রেখে মুখোমুখি। সামনে অনন্ত সুদূর অন্ধকার মেঝে।
মধ্যিখানে অলোকরঞ্জন। অনেক উপরে শূন্যতায় ঘুরছে সিলিংপাখা। । হাওয়ায় পাতা খুলছে, মলাট থেকে বিভাব, অন্তরা, সঞ্চারীর
দিকে…
"মাকে বলতে আপত্তি নেই
রাত্রে আমি তোমার কাছে গিয়েছিলাম
তোমার পায়ে মুখ রেখে
গভীর শান্তি পেয়েছিলাম
ভ্রুকুটিহীন সন্ধ্যাতারা উঠল যখন... "
তখন,
আমাদের ছুঁয়েছিল অলোকরঞ্জন?
নাম
ছেলের সাথে হেঁটেছিলাম হাতের মুঠোয় রেখে ছিলাম
নিভৃত এক নাম
রাত্রিবেলা বসন্তবায় বয়তে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়
মুঠোর মধ্যে ঝরল অবিরাম
তখন আমার দশ নিরুপায় দশটি দিকে দুহাত বাড়ায়
নাবাল জমি গড়িয়ে গেল খুব আদরের নাম
গড়িয়ে গেল অন্ধকারে তবু সে নাম ডাকতো যারে
বুকের ভেতর সেই তো গুমনাম!
ছেলে আমার ভীষণ শিশু আবদারে সে চায়তো শুধু
একটি খিলি পান
হাতে দিলাম মায়ের মত অপূর্ব এক নাম…
একা
এভাবেই থেকে যাওয়া?
যেমন জঙ্গলে থাকে প্রতি বৃক্ষ একা!
শাখায় শাখায় লেগে মাঝেমাঝে কেঁপে ওঠা?
বাড়বাগ্নির দিন এলো
সেইসব দিনগুলি শাখায় শাখায় পুড়ে যাওয়া
জঙ্গল পুড়ে গেলে ধু ধু মাঠ, ছাই, আধপোড়া হাওয়া
উড়ে আসে, চোখের পলকে অন্ধ জ্বালা…
কোথায় পালাবি তুই?
পালা
জ্বলন্ত কান্ডের নিচে মাটি
মাটির অনেক নিচে গাছে গাছে শিকড়ের মালা
জড়িয়ে রয়েছে অন্ধ ভুঁই…
মাটির উপরে তবু
একা একা একা থেকে যাওয়া…
মন্তব্যসমূহ