অনিমিখ পাত্র
তিন লাইনের লেখা
৭.
তোমাকে দেখাতে চাই হৃদ্পদ্ম কেমন রক্তে ভেজা
এ কথাটি লিখে ভাবি, এ কেমন কথা !
আমি তো ভেবেছি শুধু হাতের আড়াল করে সাবধানে আলো নিয়ে যাবো
৮.
ভাবছি টানেল। শেষে নিশ্চয়ই উদ্ভাসিত আলো
আলো মানে আশা। ভেবে নার্ভ যেই আলগা করেছি
অন্ধ ড্রাইভার কালো চশমা খুলে আমাকে দেখালো
৯.
বৃষ্টিপাতের মধ্যে অশ্রুজল সহজে লুকায়
লাভ কী বা জেনে ?
যদি মেঘবৃষ্টিহীন মাঠে ধাতব অস্ত্রের মতো কান্না পায়
১০.
রাত্রে হিম পড়ছে। আর সকালে শিশির।
প্রাণটি খোলা পাত্রে রাখি। উবে যাক। যেমন কর্পূর
কারণ আমার দেহ উপযুক্ত নয়। বড়ো সন্দেহে অস্থির
১১.
কার কাছে যেতে গিয়ে কার কাছে চলে গেছে কথা
অসময়ে বৃষ্টিপাত, ঝড় ঝঞ্ঝা , আরও যা যা বিপর্যয় হলো
আকাশ যে ভেঙে পড়লো, সব সবই আসলে অযথা
১২.
একটি নাছোড় মাছি বারবার লেখাকে তাড়ায়
কে ছিল দূরের যাত্রী, কার সামনে স্টপ এসে গেছে
বিরক্তি সব মোছে। গন্তব্য ছোটো হয়ে যায়
১৩.
কে তুমি পড়িছ বসি ? কেউ না তো ! অন্য কেউ নয়
কাব্যকথা থাক। ফুল নিজেই ফুটেছে
এমন নিজেকে দেখা খুব বেশি সহ্য করা যায় ?
১৪.
আবহাওয়ার ভেতরে যে হাওয়া, তাতে সারাদিন অন্তর্ঘাত ওড়ে
সারাদিন পথ বন্ধ। সারাদিন মৃদুমন্দ ক্ষয়
গরমে ঘামের মতো সারাদিন লেপটে থাকে ভয়
১৫.
প্যাকিংবাক্সের কাছে বেড়ালের মতো এসে শুয়ে আছে মৃদু শীতকাল
কে এসেছে বেড়াতে আর কে যাবে দূরের মহল্লায়
অচিরেই টিপ্পনিতে, হ্যাঁ, সাদা ক্যানভাস ভরে যায়
১৬.
মানুষও গাছের মতো। কোথাও শিকড় গাড়লে অন্যত্র সে আলগা হয়ে যায়
সবারই জীবন তবে জীবনবৃক্ষ। সুখে দুঃখে সার-জল-মাটি
এক একটা মরশুমে ফুটে ওঠে আমাদের জীবনকথাটি
মন্তব্যসমূহ