পৃথ্বী বসু

আমার জটিল মুখ



১.

এইমত দেখা হওয়া ভালো

হাসির আড়ালে যেন লুকোনো রয়েছে সন্ধ্যাকাল
ঘন চুল, অন্ধকার। গ্রামরাস্তা, এলোমেলো পথ
কাছেই উঠোন কোনো,চওড়া কপাল। আর তার
মাঝখানে রাখা আছে,তুলসীমঞ্চের মত টিপ--

লজ্জায় কাঁপা চোখ। মনে হয় প্রদীপের আলো

এইমত দেখা হওয়া ভালো


২.

খইয়ের ভিতরে ওড়ে শোক

দধিকর্মার দিন ভোরবেলা বাড়ির পুজোতে-
মা-কে দেখি এককোণে, চুপচাপ মরণের দলা
মাখে আর ডাকে বসে: আরেকটু নিবি?নিলে আয়...
'বল হরি,হরিবোল' আমার মাথায় ঘোরে স্মৃতি

বুকে দ্রুত বীণা বাজে। ঝরে যায় হাঁসের পালক

খইয়ের ভিতরে ওড়ে শোক


৩.

বারান্দায় রোদ নেই আর

কে তুমি গাইছ বসে পুরাতনী হেরে যাওয়া গান
কে তুমি চাইছ যেতে গ্রামবাড়ি,বসতভিটায়...
যে তুমি ঘুরেছ পথে,বরষা পীড়িত কোনো দিনে
আমি জানি,ছেঁড়াজাল প্রতি রাতে তোমাকে পোড়ায়

বোধের শ্মশানে তুমি পড়ে থাকা চেতনার হাড়

বারান্দায় রোদ নেই আর


৪.

পুরোনো বাড়ির মত একা

ক্রমে ক্রমে ধ্বসে গেছে,কবেকার গেঁথে রাখা মন
যেখানে পেরেছে আজ,শ্যাওলাও মেলে আছে ডানা
কোনোমতে লোক ঢোকে। কোনোমতে বেরিয়েও যায়
দূর থেকে চোখে পড়ে,এ-বাড়ির আহত জীবনী

নির্মোহ বেঁচে থেকে,যেন স্থির জীবনকে দেখা...

পুরোনো বাড়ির মত একা


৫.

যন্ত্রণা থাকবেই। আছে...

আমার জটিল মুখ কার কাছে গেলে এই বেলা
হাসি ফিরে পাবে আর পাবে কিছু ময়ূরের নাচ!
বৃহৎ কথার বনে গাছে গাছে টাঙানো যে মিল
ধরা পড়ে গেলে তা-ও,কীরকম অসহায় লাগে...

যেটুকু যা বলি শুধু: যত পারো সরে এসো কাছে

যন্ত্রণা থাকবেই। আছে..

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা