সেলিম মণ্ডল

জীবনকে লেখা কবিতা






হে জীবন, তুমি কতটুকু গাছ হতে পেরেছ?
হাওয়ায় হাওয়ার তোমার ভিতর ফুলে উঠছে শীত

ডিসেম্বরের নাভি থেকে ফুল কুড়িয়ে কতদিন অঞ্জলি দেব?

পাতার বৈকল্য নিয়েও চিরহরিৎ, তুমি
মাফলার জড়ানো ছালের ভিতর পুষে রাখছ মাথা
মাথায় রক্তপাত, রক্তে জাল পাতছে শিকড়
শিকড়ে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুর কান্না

তুমি যতটা গাছ হবার চেষ্টা করো
তার অধিক গজিয়ে ওঠো মাথা ছাড়াই


শিশিরের শব্দ মুছে পায়ে পায়ে চলা যাবে, জীবন?
কু-কুয়াশার ভিতর ভিজে যায় ঘর
ঘর কী দাবি করে? পথ, পথ... পথহীন রাস্তায়
ভোরের আজান, পাখিদের গান
এসব নিয়েই যখন পৌঁছাতে চেয়েছি
দুয়ার আটা ঘরে শৃঙ্খল পরিয়ে দাও


এই ডিসেম্বর, এই মেরি খ্রিস্টমাস
আর মোজার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসা কমলালেবুর গন্ধ
এটুকুই লাল-সাদা জীবন?

যে হাওয়া বয়, সেই হাওয়ায় ঘুমের বাদ্যযন্ত্র বাজে
সংগীত কোরাসে কামড় দেয় শীত, সুর ফোটে না



কী ছিল? কিই বা থাকবে?
পায়ে পায়ে জড়িয়ে নেওয়া ধুলো-ই একজীবন

হাঁটছ কিংবা ভাসছ
গন্তব্যকে উল্লাসিত করা লক্ষ্য নয়
লক্ষ্যের একাধিক স্তব আছে

পাঁপড়ি মেলে ফুটে ওঠার আগেই পৃথিবী ও তার মানুষ
যে জীবনের প্রতি অধিকার চেয়ে বসে
সে জীবন নচ্ছার, নচ্ছার

৫.

হে অস্থিরতা, তুমিই একমাত্র জীবন

যে অতিসান্নিধ্যের ভিতর জন্ম
সেখানে মানুষ নদীর মতো বেঁকে যায়
ঢেউহীন জলরাশি বুক ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়ে মাটিতে

হৃদনাব্যতায় ফোটে পাথর

পাথরে জীবাশ্ম, ব্যর্থ মানুষের শৈল্পিক মুখচ্ছবি
মুখহীন, গহিন অন্ধকার

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা