শাহ মাইদুল ইসলাম
শাহ মাইদুল ইসলামের ছ'টি কবিতা
দুপুরগাছে বাহ ৩
আমি তার লক্ষ গহীনে নিমজ্জিত
চরম দোষাবহ নিষ্পাপ আত্মপ্রবঞ্চনা
হাত-পা ছড়িয়ে আছে ভাবা যায়
আর চোখ পিটপিট করে
আমি তার নিযুত গহীনে নিমজ্জিত
অবিশ্বাস্য একা একসাথে
পাশের বনানীতে পাতার মর্মর ধ্বণি
আকাশের বুকে শবে কদরের চাঁদ
আমি তার কোটি গহীনে নিমজ্জিত
তথাগত বসে আছেন
পরিপূর্ণভাবে ডুবে যাওয়ার
নিরাপদ ছাদের বিকশিত নিচে
আর তুমি নশ্বর প্রহরী তোমার বর্শা
বিদ্ধ করে অকিঞ্চণ সে জন
নিরুপায় তড়পায়
আমি তোমার অসংখ্য গহীনে নিমজ্জিত
দুপুরগাছে বাহ ৪
ও বাড়ি টানটান। কয়েকটা জবা ঘোর রক্তবর্ণ ফুটে আছে। কাগজের বাঘ, নীলাভ— মূহুর্ত বিশ্রাম করছে না। পুতুল বেশ কয়েকটা খুব কড়ি-টড়ি খেলছে। আঁচড়ানো-খামচানোর মতো বিড়াল কালো আছে ধুরন্ধর। কড়ি উল্টো-পাল্টি নিলে নিঁখুত লক্ষ্যে টর্চ মারছে চোর পাহারাদার। কড়ি আর চোরে মিলে এক অঙ্ক ধরলে—
বাড়িতে তার উত্তর মিলছে না, আচানক উত্তেজনা ওখানে...
দুপুরগাছে বাহ ৫
শরীর, আচমকাদাগে ভর্তি
— আমি শেখার চেষ্টা করছি, তুমি তোমার ত্বক অভিন্ন
শরীর, মুগ্ধযতি খুব সাতক্ষিরা
— পাড়াত ধোঁয়া, আবাবিল হাসি হাসি
শরীর, সাধ্যাতীত আকৃতির
— তিনটে-দুটো পাখি
শরীর, অনধিক হাঁটুজলে খেপ
— রক্ত তামাশায় মহামাছেদের গজিয়েছে একধীর পরিসর ডানা
শরীর, সারা-আমি
— ভয়বৃক্ষের পাশ ঘেঁষে যাপিত নমরুদ
শরীর, শব্দ
— ডুব
শরীর, মিনার থেকে মিনার ছোঁয়
— আমুদরিয়ায় ভাসান পিতা দেখো অমন শ্বশানবন্ধু
শরীর, দুপুরগাছে বাহ
— সারা দুপুর, শ্রী-তুমি প্রোজ্জ্বল স্বর্ণ পরিধির ভেতর
শরীর, চিনিগুড়া হাসি
— হই
শরীর, ঘুটঘুট্টি আলোয় আকাশ
— মরলে আমি আন্ধা হবো
দুপুরগাছে বাহ ৬
শ্রী দুপুর, প্রোজ্জ্বল স্বর্ণপরিধির ভেতর
সারা-তুমি
আকাশ, আলোয় ভরা
হাসো হাসি—
যে নকশা ও কৌশলে, অস্থির
ক্রিয়াবিধি এই, সারানিকটদূর বৃক্ষপনা
তোমার রক্তের ভালোবাসা দিয়েছ কাহারে?
দুপুরগাছে বাহ ৭
শ্রী পাহাড়:
আমি দু’চোখ হাসতে বেরিয়েছি
চিরদিকের সূর্য—
রমরমা...
আমি ডুব দেই তোমার স্থানে:
নোনা গভীর আঁশটে গন্ধভরা
আমার অবিবাহিত দিনগুলো,
সাঁটে এঁটে যায়...
দুপুরগাছে বাহ ৮
তুমি উচ্চতর গনিতে। যে দূররশ্মিতে দুপুরেরা হয়, ভাষাজ্ঞানে তার ব্যর্থতা সুলিখিত যেন— চিরহরিৎ হাসি। অথচ তুমি খুব উচ্চতর গনিতে। হালকা আঁচে জমিয়ে তুলছ দূরন্ত ড্রাগন, পইপই হাসি, স্লাইডিং ডোর। আঙ্গুলের ডগায় ক্রমশ বেড়ে ওঠা তিন সত্যি কামনা—
মেয়েটা গোলাপী একটা সবুজ গঙ্গাফড়িঙ
দুপুরগাছে বাহ ৯
লাফ দিয়ে এই জীবনে প্রবেশ করেছি
আমি ছিলাম বেঢপ উন্মাদ
আমাকে নাও তোমার ভেতরে
তোমার ভেতরে অত্যন্ত
হাড়হিম মৃত্যু পাঁক খায়
পাতাগুলো তিরতির কাঁপছিল
খিঁচুনিগুলো ঠান্ডা সাপের চলাচল
আমার সুকঠিন রক্তের ভেতর তীক্ষ্ণ হালুম
দানা বাঁধে
প্রাণভয়ে তোমাকে এই
অকথ্য আঁকড়ে ধরা
আমি তোমাকে নিদারুণ আঁকড়ে ধরি
দু’হাতে নগ্নতা চেঁটেপুটে খাই
তোমার উন্মুখ জোয়ারের নিস্তব্ধতায়
অফুরন্ত সোনা
ওৎ পেতে আছে
প্রাণভয়ে তোমাকে এই
অকথ্য আঁকড়ে ধরা
আমি ছিলাম বেঢপ উন্মাদ
আমাকে নাও তোমার ভেতরে
তোমার ভেতরে অত্যন্ত
দুপুরগাছে বাহ ১০
আমার সহ্যশক্তি ঘোরে কাতর! অশেষ রিকশায় চেপে তুমি ঝোঁকের উপর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসো— আহাদের এইখানে। তারপর অদ্ভূৎ গায়কী হয়: ঝড়ের কাছাকাছি এইসব, নিরাপদ! উচাটন দুখে ডুবে গেলে আমিই ডুবে যাই। মানুষ কী করে হাসছে! একখন্ড ডুবন্ত মানুষের একখন্ড মৃত মানুষের আতংকে আমাদের হৃৎপিন্ড লাফিয়ে উঠছে! অন্ধ হওয়ার বাড়ি কতদূর—
ওহ শিউলি সরকার, শিউলি সরকারের জন্য তীব্র ঘৃণা ও শক্তিশেল
হৃদয়কূপের গহীনে হৃদয়কূপ: বিবিধ সুঘ্রাণ উঠে আসে, আসাধারণ ছবি; এর জন্যই সুমত্ত হওয়া গেছে! সাধ্যাতীত আকৃতির মেয়ে রহস্যপূর্ণ ভেজা আলোয়, মৃদু অন্তর্বাস খুলে মিশমিশে কালোয় নেমে যাচ্ছো। বাকপ্রতিবন্ধি হাঁস অই ফুলগুলো! তোমার শারীরিকপনা দেখে আমার পাগল-পাগল লাগে। আত্মার শতখন্ড মাংস ছড়িয়ে দিই— অবাক ভূরিভোজে সব সত্য, বাক্যালাপ বন্ধ—
ওহ শিউলি সরকার, শিউলি সরকার ব্যতিত শিউলি সরকারের কোন বিকল্প নাই, আমার
মন্তব্যসমূহ