শুভ আঢ্য

 উত্তর মেরুর কবিতা 



উত্তরের পরোয়া করতে হয় না আমাকে
প্রশ্ন করার জন্য এই আকাশে পাখী কম’ই বেশ
দিনের বেলা আমি সাদা’তে তারই নানা শেড চেষ্টা করি বোঝার
সাদা’তে সাদা মেশাই আর এক অপরূপ সাদায় নিমগ্ন হই

কাঠের স্লেজ তাপমাত্রার হস্তান্তর করে ভূমির সাথে

খাদ্য বলতেই একটি পেঙ্গুইনের সাথে দেখা হয়ে যায়
পেঙ্গুইন খাদ্যশৃঙ্খলের কোন স্থানে আছে ও
তার চলন সম্বন্ধে আমার আক্ষরিক জ্ঞানবৃদ্ধি হয়
মদ দেখে হাতে, কর্পোরেট পেঙ্গুইনটি আমাকে জানায়
পেন্টাগনের কথা, কসমোপলিটান কালচারের বিষয়,
সন্ত্রাসবাদ নিয়ে যতটুকু সে জানতে পারে এই বরফ প্রান্তে বসে

আমাদের কথোপকথন ফিনিশ লাইনের কাছে আসলেও
বরফ গলে না, আসলে বরফ গলেই না এখানে,
আমি শুধু চাই আমার আর ওই পেঙ্গুইনটির সম্পর্ক নিয়ে
একটি বই লেখা হোক



উপন্যাস পৌঁছয় না এখানে এসে, নভেলেট
বা মডার্ন বা পোস্টমর্ডান কোনো কিছুই
গ্রহণযোগ্য ঠিকানার অভাবে এখানে ডেলিভারি দিতে পারে না
কোনো কুরিয়্যর সার্ভিস, আপনি মনে মনে জানেন ও মানেন সে কথা
যদিও এ প্রান্তে সাহিত্যের অবসর কিছু কম, উষ্ণতার মতই

এই বিপদহীনতার দিনে আমি যাত্রা শুরু করি
আর বরফের পথ শেষ হয় না, জলও হয় না শেষ বরফের মতই
রূপান্তরও সহজে ঘটে না তাদের

সামান্য খাবারের কারণ থেকে নিজেকে
সাজাই প্রাণীহত্যার রক্তে আর জুতোর ছাপ আমার
বরফে মেশে না, ২ ইঞ্চি ওপর থেকে আমার গ্লাসের তলায়
আমারই পায়ের ছাপ, চমকায় আমাকেই

খুব ওপরে হেলিকপ্টার থেকে দেখলে সেই
পায়ের ছাপকে কোনো উপন্যাসের অক্ষরের মতই মনে হয়
পাতার পর পাতা জুড়ে একটা লেখা হেঁটে যাচ্ছে আর
হাঁটা থেকে লেখা হয়ে উঠছে না কিছুই যে



ছায়ার রং নিয়ে প্রথিতযশা শিল্পীদের সাথে বিরোধ
কাটবে না, এ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ
সরিয়ে রেখেছি আমি ছায়ারই গর্ভে, আসলে রঙ নিয়ে
স্পষ্ট ধারণা নেই আমার, নাকি তাঁরা যেটা রঙ বলে জানেন
বেগুনী ও মভের তফাৎ, হেজিমনি সেটাই!

আঙুলের মত তার ছায়াও আমি সাদা’ই দেখি
তার বন্ধুত্বের রং নিয়ে আমি তামাশা করি না কখনও
যেহেতু আমার শত্রুতার রঙও একই

ডার্ক শেড মেয়েদের খুব কালো আঙুরের মত লাগে
তাদের বুকে গোলাপের বদলে কালো বসানো থাকে আঙুর
আর তার থেকে তৈরী মদকি যে ভালো লাগে তা
তাদেরকে জানানোর অভাব থেকে
আমার মৈথুনদৃশ্য দেখতে হয় আপনাকে

এই সব নিয়ে ছায়ার বক্তব্য আমি আমল দিই না

যদিও একান্ত ক্ষমাপ্রার্থী আপনার কাছে



পেঙ্গুইনগুলো তাদের মতই ভাবে আমাকে, কিছুটা
ভয় ছেড়ে তাদের সাথে আমাকে ভিড়িয়ে নেয় দলগত
সাদা আর কালো ঘষে আমিও হাঁ ছড়ানোর সময়
নিজেকে অংশ ভাবি বরফেরই

আমিও তাদের মধ্যে মেয়ে পেঙ্গুইনগুলোর দিকে
ঝুঁকে থাকি অল্পবিস্তর, দোষ থেকে দোষক্ষয় ঘটানোর
এই প্রক্রিয়া তারা বুঝতে পারে না

আমার বিছানার তলায় কাঠ প্রায়শই
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসতে না পারা অসুস্থ বৌ-য়ের কথা
মনে করিয়ে দেয়, আর আমি পেঙ্গুইনগুলোর দিকে
আরও বেশী করে করে ঝুঁকে পড়ি


পূর্বপরিকল্পনা মত বরফে বেরোলে সেদিন
বেলচা থেকে আমার মাথা দেখা যায় না বলে শুনেছি,
একটি ভোঁদড় আমাকে একথা জানিয়েছে

তার মতামতের গুরুত্ব সর্বক্ষেত্রে যে আছে তা নয়
তবু ফাটলের সময় জল থেকে বাঁচার পন্থা নির্ধারক
ওই ভোঁদড়টির প্রতি অনুগত থাকতেই হয় কখনও সখনও
কারণ দ্বিতীয় কোনো মানুষের অনুপস্থিতি

খিদের সময় মাছ থেকে আমি টানি নিজের ভগ্নাংশ
আর কাঁটা থেকে আলাদা করে নিই

ভোঁদড়টি আমার এইসব অসভ্যতা দেখে, ঝলসানো মাছের
আগুন থেকে দেখে সারা মুখে আমার স্বার্থপরতা ঝিকিয়ে উঠেছে

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা