সম্পর্ক মণ্ডল


প্রতিষ্ঠানের পোষ্য
                     

টেবিলের নিচে চুপ করে বসে থাকো

টেবিলের পায়া ধরে
ক্রমাগত লেজ নাড়িয়ে যাও

টেবিলের নিচের দিকে উড়ে যাওয়া
কাগজ-টুকরো মুখে করে
তুলে আনো

তারপর বড়োবাবুর দয়া হলে
তার তেলচিটে পকেটের ভেতর
থেকে বেরিয়ে আসা

দু এক টুকরো মাংসপিণ্ডতে
জিভ রাখো

'লেহন করো রে অবোধ 
লেহন করো'

শুধু এটুকু শুনেই লালা ঝরিয়ে
লেজ নাড়িয়ে
এগিয়ে যাও

বড়োবাবুর পায়ের তলায়

দ্যাখো, ক্ষমতার চেনখানা তোমার গলায় বেঁধে
বড়োবাবু ঘুমিয়ে পড়েছে

উপরে সিলিং ফ্যান ঘুরছে আর ঘুরেই যাচ্ছে

নিচে প্রতিষ্ঠানের পায়ের নিচে শুয়ে
তুমি ভেবেই যাচ্ছ


ঘুম ভাঙলেই 
        স্বর্গ হাতে পাবে



নবান্নে দিন

ভিক্ষুক প্রণতি চাইলেন

এই নবান্নের সকালে তার
              প্রণতি চাওয়াটুকু ছাড়া
কোথাও যাওয়ার নেই

ভিক্ষুক এবার মাতৃধামে সেবা চাইলেন
মা অন্নপূর্ণার কাছে

আর মা তার কাঁচুলি খুলে যেটুকু অন্নভোগ ছিল
তুলে দিলেন 
ভিক্ষুকের হাতে

ভিক্ষুক এবার যাত্রার অনুমতি চাইলেন


ভিক্ষুক যাওয়ার পর
মা এবার তার সব কাজ ফেলে বাস্তুপতির সাথে
বের হবে দ্বারে দ্বারে

ভিক্ষান্ন নয়
কাঙালি ভোজনের জন্য এই
ভিক্ষান্ন পাক করবেন
               মা নিজে 

অলৌকিক এই নবান্নের দিনে



ফতনা

বিশুদ্ধ প্রেমে টান লাগলে 
ফতনা নড়ে

গুরুজি বলে

আমি নিজেও দেখেছি প্রেমের পুকুরে

রাত্রি দুপুরে 
       ফতনাখানি নড়াচড়া করে

ব্যাকুল প্রেমের কাছে তবু তার 
                       ঘাই ওঠে কই

কাছে গেলে তার প্রেমের প্রকাশখানি দেখে
বিকাল হয়ে ওঠে মনের গভীরে

আর বাড়ির চালাঘরের মাথায় 
                      মিথুনরতপক্ষীযুগল
দেখে

শুদ্ধ প্রেমের জলে ঢেউ ওঠে

তখনই
    ফতনায় টান লাগে 


কোনও অজানা আঘাতে
          নয়ন হতে তরলের বীর্যের মতো

অশ্রু গড়িয়ে নামে

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা